পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৃহৎ সঙ্গ, ঘরের খাম খাঁসধাৰপত্র কিছুই বাদ রাখে নি আঁকতে। এখন সেই সিনে রাজার সিংহাসন পড়েছে। রাজা বসলেন এসে সিনের পার্সপেকটিতে যেখানে পাপোশটি রাখা আছে ঠিক সেইখানে একটা চোঁকিতে । অতিরিক্ত পার্স পেকটিভের ফল দেখে ছবিতে। রাজার স্থান হল পাপোশের জায়গায় । আর-একবার এইরকম পার্স পেকটিভের ধাধায় পড়েছিলেম ছাত্রদের নিয়ে । নন্দলালরা তখন ছাত্র। আর্টস্কুলে আমি কাজ করি। রাশিয়া থেকে একটি মেম এল । বললে, ‘বুদ্ধের ছবি আঁকিব, ঘর চাই একটা । ছবি আঁকবে, বর চাই তার, কী করি। আর্টস্কুলে তোমার দাদার যেটা ড্রইং রুম ছিল সেই ঘরট ছেড়ে দিলুম। সে ঘরের চাবি নিল ; বললে, একলা ঘরের দরজা বন্ধ করে নিশ্চিন্তমনে ছবি আঁকবে । আচ্ছ, তাই হোক। মেমটি রোজ আসে, ছবি আঁকে ; আমি মাঝে মাঝে যাই । উত্তর দিকের দেয়াল জুড়ে কাগজ সেটেছে। কাজের সময় ছাড়া বাদবাকি সময় পরদ টেনে ছবি ঢেকে রাখে । ছাত্রেরা কেউ যেতে পারে না কী হচ্ছে দেখতে । নন্দলাল বললে, “কী ক'রে ড্রইং করে দেখতে চাই।’ মেমকে বললুম সে কথা, ‘আমার ছাত্রদের দেখাও একবার, কী করে তুমি ড্রইং কর । সে বললে, ‘আর কয়েক দিন বাদে আমার পেনসিল ড্রইং শেষ হয়ে যাবে, তখন দেখাব ।’, কদিন বাদে খবর দিলে, ‘এবার আসতে পারে। ’ নন্দলালদের নিয়ে গেলুম । ছবির পরদা সরিয়ে দিলে ৯ প্রকাণ্ড কাগজে বুদ্ধের সভা আঁকছে— ও মা, পাসপেকটিভ এমন করেছে, নীচে থেকে উপরে উঠে সেই কোথায় বুদ্ধদেব বসে আছেন নজরে পড়ে না। এ কী ছবি । এ কী পাস্পেকটিভ। মেম বললে, ‘করেকৃঢ় পাসপেকটিভ হয়েছে। নন্দলাল বললে, ‘পাসপেকটিভের চূড়ান্ত হয়েছে, কিন্তু চিত্রের কিছু নেই এতে । পরে শুনি সেই ছবিই কোন-এক রাজার কাছে বিক্রি করে অনেক টাকা হাতিয়ে চলে গেছে সে দেশে । কত মুখদুঃখের মান-অপমানের ধাক্কা খেয়ে খেয়ে আর্টিস্টের মন তৈরি হয় । আমরা সব স্বইছাড়া ; প্রকৃতি-মায়ের আদুরে, কোলের কাছাকাছি ছেলে ! একটা বুনে ভাব আছে। সবার সঙ্গে মেলে না— সত্যিই তাই। মুখদুঃখ আমাদের বেশি করে বাজে, জীবন উপভোগ করবার ক্ষমতাও আমাদের বেশি । প্রকৃতি আমাদের বেশি করে দিয়েছে সবই। একটু আলো দেখি, ছুটে বেরিয়ে পড়ি। সেটিমেন্টাল ? ঠিক তা নয়। অবিশুি, এ কথা বলে অনেকেই আমাদের 26 е