চার ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে আশ্রমের শালবনের উপর খানিক স্থির হয়ে “দাড়িয়ে মাস্তে আস্তে চলে গেল। ঠিক সন্ধে হচ্ছে সেই সময়টিতে। দু বন্ধুতে এই দৃপ্ত দেখে মুগ্ধ। দুজনেই বলে উঠলুম, বা, কী চমৎকার। মুখে আর কথা নেই কোনো। শুধু বিস্ময়ে বা বাঃ' করছি দাড়িয়ে। পিছন থেকে রথী ভায় বলে উঠলেন, ও কিছুই নয়, মেঘও নয় কুয়াশাও নয়। ও হচ্ছে চাল-কলের ধোয়া।’ আরে ছো: ছো, রথী ভাই, এ তুমি করলে কী ? তুমি আমাদের এত ভাবুকতা এত কবিত্ব এমনি করেই মাটি করে দিলে ? কারণেও বললে, এমনি করে আমাদের স্বপ্ন নষ্ট করে দিতে হয় ? জানলেই বা তুমি, আমাদের তা বললে কেন ? দেখে তো কী কাণ্ড । দু আর্টিস্টকে এমনি বেকুব করে দিলে। বেশ ছিলুম তখনকার শাস্তিনিকেতনে। ভোরে উঠতুম। রবিক তো অন্ধকার “থাকতেই উঠতেন, সেই ওঁর চিরকালের অভ্যেস। দরজা খোলা, বর্ষাকাল, একটু একটু বৃষ্টি হচ্ছে ; হাতমুখ ধুতে ধুতে দেখতুম সেখান থেকে রবিকার ঘরে উপরের একটি তাকে বাতি জলছে, ঠিক যেন শুকতারাটি জলজল করছে ; মনে হত সমস্ত শাস্তিনিকেতনের উপর যেন আকাশ প্রদীপ জলছে আর আমরা ছেলেপুলের নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। পাল্লা দেবার লোক চাই। সেই লোক-আর নেই। গণেশকে পেলুম না, কাঠের গণেশ নিয়েই কারবার করে গেলুম। বড়ে খুশি হয়েছিলুম রবিক যখন ছবি আঁকতে আরম্ভ করলেন। ভাবলুম এইবারে এক রাস্তায় চলবার লোক পেলুম ; এইবার এল বড়ে ওস্তাদ আমাদের মাঝখানে । বুড়ো হয়ে গেছি, আর জোর নেই। প্রতিদ্বন্দ্বী এখন না আসাই ভালো । না, তা কেন ? আসে, তাই তো চাই । ভালোই হবে । কিন্তু দেখছি নে তো কাউকে। এখনো যে অনেক কিছু আছে ভিতরে পড়ে। ভেবেছ নতুন কায়দাতে হার মানব ? তা নয় । এক বুড়ে ওস্তাদের ছাত্র দিগ্বিজয়ী কুস্তিগির হয়ে উঠেছে। দেশ বিদেশে তার নাম। সবাইকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়, কেউ পারে না তার কাছেই এগোতে। একবার তার শখ গেল গুরুর সঙ্গে কুস্তি করে গুরুকে হারিয়ে নাম কিনতে । রাজা শুনে আয়োজন করবার হুকুম দিলেন । পাড়ায় পাড়ায় ঢোল পিটিয়ে দিলেন দিগ্বিজয়ী কুস্তিগির এবারে গুরুর সঙ্গে কুস্তি লড়বে। দিন ঠিক হল। লোকে লোকারণ্য দুজনের কুস্তি দেখতে । বুড়ে পালোয়ানকে রাজা Ret R
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৬৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।