দাড়ি কামানো বুরুশের মতো ছোটো এবং মুড়ে বাট ; বাগানের পাত-লতা কুটো-কাটা কাটানোর জন্যে ছিল চোচের মতো খোচা দুষ্ঠাক কাটা যাতে সামান্ত কুটোটিও ঝুড়িতে তুলে নেওয়া চলে অনায়াসে ; উঠোন, দালান, বারান্দা কাটানোর বাট 'ছল চামরের মতো হালকা ফুরফুরে, বাতাসের মতো হালকা পরশ বুলিয়ে চলত মেঝের উপরে। এই নানারকম ঝাটার খেলা খেলিয়ে চলে যেত সে রোজই । আঙিনা, রাস্তা, অলি-গলি, বারান্দা ঝেটিয়ে যেত ছীরু যখন তকতকে পরিষ্কার করে, তখন তারই উপরে চলত যাত্রা অভিনয় আবার । এবারে কেবল চলন্ত ছবি ! একটা ছোট্ট টাট্র, ঘোড়া, তার চেয়ে ছোট্ট একটা পালকি-গাড়ি টানতে টানতে পুরোনো বাড়ির ফটকে এসে দাড়াতেই বাক্সর মতো ছোট্ট গাড়ি থেকে মোটা-সোট গম্ভীর এক বাবু নেমে পড়েন, মাথার চুল তার কদম ফুলের মতো ছাট। সোয়ারি নামতে না নামতে বো করে গাড়িটা গে!ল চক্করের পশ্চিম দিকের অশ্বথ তলায় গিয়ে দাড়িয়ে ঘোড়াটাকে ছেড়ে দেয়। ছোট্ট ঘোড়া অমনি ছোট ফটক ঠেলে কুচি ঘাস চোরর্কাটা ছিড়ে ছিড়ে খেতে লাগে, আর গাড়িখান কুমির পোকার শুড়ের মতো বোম জোড়া আকাশে উচিয়ে নৈঋত কোণের দিকে চেয়ে তার বাবুর জন্যে অপেক্ষ করে থাকে । একটা ছাতি আস্তে আস্তে ফটকের দিকে এগিয়ে চলে, অথচ মানুষ দেখি নে তার নীচে । হঠাৎ দেউড়ির কাছে এসে ছাতিটা বন্ধ হয়ে তলাকার ছোট্ট মাচুর্যটিকে প্রকাশ করে দেয়— মাথায় চকচকে টাক, ছোট্ট যেন একটি মাটির পুতুলের মতো বেঁটেখাটো মানুষটি। ঘণ্টা বাজে এবার সাতবার, তার পর খানিক ঢং ঢং টং টান দিয়ে সাড়ে সাত বুঝিয়ে থামে। রোদ এসে পড়ে লাল রাস্তার উপরে একফালি সোনার কাগজের মতো । চীনেদের থিয়েটার দেখা যেমন খাওয়াদাওয়া গল্পগুজবের সঙ্গে চলে, আমাদের যাত্রা দেখা যেমন – খানিক দেখে উঠে দিয়ে তামাক খেয়ে নিয়ে, কিম্বা হয়তো ঘরে গিয়ে এক ঘুম ঘুমিয়ে এসেও দেখা চলে, তেমনি ভাবের দেখা শোনা চলত এই উত্তর দিকের জানলায় বসে। হয়তো ঘরের ওধারে একটা কোঁচের তলায় ঢুকে রবারের গোলাটা পালায় কোথায় এই সমস্তার মীমাংসা করতে কোঁচের তলায় নিজেই একবার ঢুকে እNor
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।