ছবি আঁকে। কী আর তেমন আঁকবে এই কয় দিনে, তবু হাত তার ধীরে ধীরে বেশ পাকা হয়ে আসছিল । সাহেব দেশ থেকে ফিরে এলেন, চাপরাসি আবার তার কাজে যোগ দিলে। একদিন সাহেব এসে বললেন, ‘তুমি আমার চাপরাসির করেছ কী ? ছবি আঁকার কথা ছেড়ে দাও, লোকটা একেবারে বদলে গেছে। তার শিষ্টত আচারব্যবহার কথাবার্তা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আগের সেই চাপরাসি আর নেই, তুমি আগাগোড়া লোকটাকে অমন করে বদলে দিলে কী করে ? বললুম, ‘আর কিছু নয়, আমি শুধু ওকে বসতে শিখিয়েছিলুম।’ সে সময়ে বাংলাদেশের যত জমিদার মিলে একটা সোসাইটি হয়, নাম ল্যাণ্ডহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন । সিংহমহাশয় সভাপতি । উডরফ আর ব্লাপ্টও জুটলেন সে সময়ে। স্থরেন কোমর বেঁধে কাজ করে তাতে স্বরেনের মাথায়ই খেলল প্রথমে একটা ছবির একৃজিবিশন করতে হবে। আমার যা কখানা ছবি ছিল, ওকাকুর। এনেছিলেন সঙ্গে কিছু জাপানি প্রিপ্ট, আর এখান-ওখান থেকে কুড়িয়ে বাড়িয়ে জোগাড় করলে আরো কখানা ছবি । তাই নিয়ে সে তৈরি । একটা মস্ত বাড়ি ছিল ল্যাণ্ডহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের , নীচের তলায় বিলিয়ার্ড রুম, পড়বার ঘর, উপরে ব্যবস্থা আছে কোনো সভ্য দূর থেকে এলে থাকতে পারে সেখানে । সুরেন চাইলে সেই বিলিয়ার্ড রুমেই একৃজিবিশন হবে। সিংহমশায় বললেন, ছবির আমি বুঝি নে কিছুই , তবে চাইছ ঘর একৃজিবিশন সাজাতে, ত, নাও। সেই বিলিয়ার্ড-রুমেই ছবি সব সাজানো হল । বেশ লোক জন আসত দেখতে , আমাদেরও ভালো লাগত, ইচ্ছে ছি... আরো কয়েকদিন চলে এমনি । এদিকে ছোকরা ব্যারিস্টার ছিলেন অনেক সেই অ্যাসোসিয়েশনে, নতুন বিলেতফেরত । তারা রোজ সন্ধেয় আসেন, বিলিয়ার্ড খেলেন, ব্রিজ খেলার আডড জমান, তাদের হল মহা অসুবিধে। কদিন যেতে না-যেতেই তারা লাগলেন গজগজ, করতে, 'ঘর আটকে রাখা হয়েছে। গজগজানি শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি ছবি-টবি নামিয়ে নিলুম দেয়াল থেকে। সেই একজিবিশনে উড রফ, ব্ল্যান্টু, এদের সঙ্গে আলাপ জমল । সেই হল প্রথম আমাদের ছবির একজিবিশন । তার দু-তিন বছর পরে হাভেল চাইলেন তাদের সেই ছোট্ট আর্ট ক্লাবটা ভালো করে তৈরি করতে। কমিটি গঠন হল, আমরা তাতে যোগ দিলুম। ল্যাণ্ডহোল্ডার্সদেরও কেউ কেউ এলেন । উত্তরপাড়ার রাজা প্যারীমোহনও এলেন। লর্ড কিচুনার সভাপতি, আমাকে হাভেল বলেন,
- $e