পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাশিয়ান কাচের বোল ছিল, সেইটি যেই সরিয়েছি দেখি রাধিকার মন্দির। চেচিয়ে উঠলুম, ‘ওরে পেয়েছি রে, পেয়েছি! দেখ, দেখ, এই তো আমার রাধিক ঠিক তেমনি আছে।’ অতি যত্নে রাখতে গিয়ে, আমি কি অলকের মা রেখেছিলুম ওটি কাচের বোলের পিছনে লুকিয়ে—মনে নেই কারোই। যাক, পাওয়া তো গেল, পারুলকে বললুম, ‘এবারে জেনে রাখে। ভালো করে, আর যেন না হারায়।’ তার পর এলুম বারান্দায়। যে চেয়ারে বসে পুতুল গড়তুম দেখেছ তো সেটি ? তাতে হেলান দিয়ে বসে মন্দিরটি হাতে নিয়ে বললুম, ‘এবারে ডাকে। মিলাডাকে। মিলাড এল। বললুম, কী তুমি ভিনাস ভিনাস করে। দেখে। একবার, তোমাদের ভিনাস ঝকৃ মেরে যাবে এর কাছে।’ বলে এক হাতে ধরে আর হাতে মন্দিরের দরজাটি খুলে দিলুম। মিলাড দেখে একেবারে থ। আমি মিলাডার মুখের দিকে একবার করে তাকাই আর নীচের চাবি ঘোরাই, সঙ্গে সঙ্গে রাধিকাও ঘুরে ফিরে দাড়ায়। তাকে সামনে থেকে দেখালুম, পিছন থেকে দেখালুম। যে হাতে পদ্মটি ধরে আছে সে দিক থেকে দেখালুম, অন্য হাতটিও ঘোরালুম, বললুম, “দেখো, সব দেখো । তোমাদের ভিনাসেরও হাত নেই ; কোন হাতে কী ছিল কেউ জানলও না কোনোদিন ; আর আমারও রাধিকার হাত নেই। তবে এক হাতে পদ্ম আছে এটা তো জানতে পারা যাচ্ছে। এ হল আমার খণ্ডিরাধিকে । পুরীর রাজার যেমন ছিল খণ্ডিরানী, এ তেমনি আমার খণ্ডিরাধিকে।’ খণ্ডিরানীর গল্প জান ? পুরীর রাজাকে বলে চলন্ত বিষ্ণু, রাজ রথে হাত দিলে তবে রথ চলে। বহুকাল আগে, একবার রথযাত্রা হবে, জগন্নাথ রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাবেন । রাজা চলেছেন রথের আগে আগে, চামর করতে করতে। চার দিকে লোকে লোকারণ্য ; রথেরু দড়ি টানবার জন্য তীর্থযাত্রীদের তাড়াহুড়ো ঠেলাঠেলি ; কেউ কেউ পড়ে যাচ্ছে ভিড়ের চাপে। দেখেছ রথযাত্রা কখনো ? এখন, রথ চলেছে ভিড় ঠেলে । রাজা দেখেন পথের পাশে এক পরমাসুন্দরী ভিখারিনী বসে ছেড়া ময়লা একখানি শাড়ি পরে। রূপ দেখে রাজা গেলেন মোহিত হয়ে । বাড়ি ফিরে এসে রাজা আনালেন সেই ভিখারিনীকে ; আনিয়ে রানী করলেন তাকে । সেই রানীর ছিল এক হাত কাটা, লোকে বলত তাকে খণ্ডিরানী। আমি যখন পুরীতে ষাই তখনে৷ সেই

ግ«