পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই লোকটিই দেখিয়েছিল তা । সেও চোখ ভুলিয়েছিল তখন। সেই সময়ে জাকতে জানতুম না তো সেইরকম কিছু, তবে রঙ নিয়ে ঘাটাঘাটি করইম ; ইচ্ছে করত আমিও রঙ তুলি দিয়ে এটা ওটা আঁকি । আঁকার ইচ্ছে ছোটোবেলা থেকেই জেগেছিল । এর বহুকাল পরে বড়ো হয়েছি বিয়ে হয়েছে, বড়ে৷ মেয়ে জন্মেছে, সেই সময় একদিন খেয়াল হল ‘স্বপ্নপ্রয়াণ’টা চিত্রিত করা যাক । এর আগে ইস্কুলে পড়তেও কিছু-কিছু জাক অভ্যেস ছিল। সংস্কৃত কলেজে অন্থকূল আমায় লক্ষ্মী সরস্বতী আঁকা শিখিয়েছিল। বলতে গেলে সেই আমার প্রথম শিল্পশিক্ষার মাস্টার, সূত্রপাত করিয়ে দিয়েছিল ছবি আঁকার । তা, স্বপ্নপ্রয়াণে ছবি আঁকবার যখন খেয়াল হল তখন আমি ছবি আঁকায় একটু-একটু পেকেছি ! কী করে যে পাকলুম মনে নেই, তবে নিজের ক্ষমতা জাহির করার চেষ্টা আরম্ভ হল স্বপ্নপ্রয়াণ থেকে । ‘স্বপন-রমণী আইল এমনি, নিঃশব্দে যেমন সন্ধ্যা করে পদার্পণ’ এমনি সব ছবি, তখন সত্যি যেন খুলে দিল মনোমন্দিরের চাবি । ছবিখানি ‘সাধনা কাগজে বেরিয়েছিল । যাই হোক, স্বপ্নপ্রয়াণটা তো অনেকখানি একে ফেললুম। মেজোম আমাদের উৎসাহ দিতেন । বালক’ কাগজের জন্য লিথোগ্রাফ প্রেস করে দিলেন র্তার বাড়িতে । যার যা-কিছু আঁকার শখ, লেখার শখ ছিল, মায় রবিক-যুদ্ধ, সবাই তার কাছে যেভুম। মেজোম আমার স্বপ্নপ্রয়াণের ছবিগুলো দেখে ধরে বসলেন, ‘অবন, তোমাকে রীতিমত ছবি অঁাকা শিখতে হবে ।’ উনিই ধরে বেঁধে শিল্পকাজে লাগিয়ে দিলেন। আমারও ইচ্ছে হল ছবি আঁকা শিখতে হবে। তখন ইউরোপীয়ান আর্ট ছাড়া গতি ছিল না । ভারতীয় শিল্পের দামও জানত ন৷ কেউ। গিলাডি আর্টস্কুলের ভাইস-প্রিন্সিপাল, ইটালিয়ান আর্টিস্ট— মেজোম। কুমুদ চৌধুরীকে বললেন, ‘তুমি অবনকে নিয়ে তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দাও, আর শেখার বন্দোবস্তও করে।’ মাকে জিজ্ঞেস করলুম। মা বললেন, ‘কোনে। কাজ তো করছিস নে, স্কুল ছেড়ে দিয়েছিল, তা শেখ-না। একটা কিছু নিয়ে থাকবি, ভালোই তো ’ ব্যবস্থা হল, এক-একটা lesson এর জন্যে কুডি টাকা দিতে হবে, মাসে তিন-চারটে পাঠ দিতেন তার বাড়িতেই। খুব যত্ন করেই শেখাতেন আমায়। তার কাছে গাছ ডালপালা এই-সব অঁাকতে শিখলুম। প্যাস্টেলের কাজও তিনি যত্ন করে শেখালেন। তেলরঙের কাজ, প্রতিকৃতি আঁকা, এই পর্যন্ত উঠলুম সেখানে । ছবিশেখার হাতেখড়ি হল \) s o