এটা করতেই হবে।’ সারাক্ষণ গা ঘিনধিন করতে লাগল। কোনো রকমে শেষ করে দিয়ে যখন ফিরলুম তখন ১০৬ ডিগ্রী জর। সন্ধেবেলা জ্ঞান হতে দেখি, ঘরের বাতিগুলো নিরস্ত প্রদীপের মতো মিটমিট করছে। মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হয়েছিল। মাকে মড়ার মাথার ঘটনা বললুম। মা তখনকার মতো ছবি আঁকা আমার বন্ধ করে দিলেন ; বললেন, ‘কাজ নেই আর ছবি অঁাকায়। তখন আমার কিছুকালের জন্য ছবি অর্ণকা বন্ধ ছিল। তার পর একজন ফ্রেঞ্চ পড়াবার মাষ্টার এলেন আমাদের জন্য, নাম তার হামারগ্রেন । রামমোহন রায়ের নাম শুনে তার দেশ নরওয়ে থেকে হেঁটে এ দেশে উপস্থিত হয়েছিলেন। তার কাছে একটু-একটু ফ্রেঞ্চ পড়তুম, তিনি খুব ভালো পড়াতেন। কিন্তু পড়ার সময়ে খাতার মাজিনে র্তার নাক মুখের ছবিই অণকতুম বসে বসে। তাই আর আমার ফ্রেঞ্চ পড়৷ এগোল না। এ দেশেই তিনি মারা যান। মারা যাবার পরে আমার খাতার সেই নোটগুলো দেখে পরে তার ছবি অঁাকি । বহুদিন পরে সেদিন রবিকাকা বললেন যে নরওয়েতে র্তার মিউজিয়াম হচ্ছে, যদি তোমার কাছে তার ছবি থাকে তবে তারা চাচ্ছে । তার চেহার কারো কাছে ছিল না। আমি পুরাতন বাক্স খুজে সেই ছবি বের করে পাঠাই, তার আত্মীয়স্বজন খুব খুশি হয়ে আমাকে চিঠি দিয়েছিলেন। ভাগ্যিস তার চেহারা নোট করে রেখেছিলুম। ষাক ও কথা । তেলরঙ তো হল । এবার জলরঙের কাজ শেখবার ইচ্ছে । মাকে বলে আবার তার কাছেই ভরতি হলুম। এখন ল্যাণ্ডস্কেপ আর্টিস্ট হয়ে, ঘাড়ে ‘ইজেল’, বগলে রঙের বাক্স নিয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলুম। কিন্তু কতকাল চলবে আর এমনি করে ? তবু মুঙ্গেরের ও দিকে ঘুরে ঘুরে অনেকগুলি দৃশু একেছিলুম। কিছুদিন তো চলল এমনি করে, মন আর ভরে না। ছবি তো একে যাচ্ছি, কিন্তু মন ভরছে কই ? কী করি ভাবছি, রোজই ভাবি কী করা যায়। এ দিকে স্টডিয়া হয়ে উঠল তামাক খাবার আর দিবানিদ্রার আড্ডা। এমন সময়ে এক ঘটনা। শুনতেম আমার ছোটোদাদামশায়ের চেহারা অতি সুন্দর ছিল, কিন্তু আমাদের কাছে তার একখানাও ছবি ছিল না। আমি তার ছবির জন্য খোঁজখবর করছিলুম নানা জায়গায়। তখন বিলেত থেকে এক V) ev)
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।