করে কাজ ? তখন এক তলার বড়ো ঘরটাতে এক ধারে চলেছে বিলিয়ার্ড খেলার হো হো, এক ধারে আমি বসেছি রঙ তুলি নিয়ে আঁকতে। দেশের শিল্পের রাস্ত তো পেয়ে গেছি, এখন আঁকব কী ? রবিকাকা আমায় বললেন, বৈষ্ণব পদাবলী পড়ে ছবি আঁকতে। রবিকাকা আমাকে এই পর্যন্ত বাৎলে দিলেন যে চণ্ডীদাস বিদ্যাপতির কবিতাকে রূপ দিতে হবে । লেগে গেলুম পদাবলী পড়তে। প্রথম ছবি করি ভারতীয় পদ্ধতিতে গোবিন্দদাসের দু-লাইন কবিতা— পৌথলী রজনী পবন বহে মন্দ চৌদিশে হিমকর, হিম করু বন্দ । এ ছবিটা এখনো আমার কাছেই বাক্সবন্ধ। সেই আমার প্রথম দেশী ধরনের, ছবি ‘শুক্লাভিসার’ । কিন্তু দেশী রাধিক হল না, সে হল যেন মেমসাহেবকে শাড়ি পরিয়ে শীতের রাত্তিরে ছেড়ে দিয়েছি। বড়ো মুষড়ে গেলুম—না, ও হবে না, দেশী টেকৃনিকৃ শিখতে হবে। তখন তারই দিকে ঝোক দিলুম। ছবিতে সোনাও লাগাতে হবে । তখনকার দিনে রাজেন্দ্র মল্লিকের বাড়িতে এক মিস্ত্রি ফ্রেমের কাজ করে। লোকটির নাম পবন, আমার নাম অবন । তাকে ডেকে বললুম, ‘ওহে, স্যাঙাত, পবনে অবনে মিলে গেছে, শিখিয়ে দাও এবারে সোনা লাগায় কী করে। সে বললে, ‘সেকি বাবু, আপনি ও কাজ শিখে কী করবেন ? আমাকে বলবেন আমি করে দেব ।’ ‘ন হে, আমার ছবিতে সোনা লাগবে ; আমাকে শিখিয়ে দাও । শিথলাম তার কাছে কী করে সোনা লাগাতে হয়। সবরকম টেকৃনিক তো শেখ হল, তার পর আমাকে পার কে ? বৈষ্ণব পদাবলীর এক সেট ছবি সোনার রুপোর তবক ধরিয়ে একে ফেললুম। তার পর বেতালুপঞ্চবিংশতি আঁকতে শুরু করলুম। সেই পদ্মাবতী পদ্মফুল নিয়ে বসে আছে, রাজপুত্তর গাছের ফাক দিয়ে উকি মারছে আর অন্যগুলিও। ষাক, রাস্তা পেলুম, চলতেও শিখলুম, এখন হু হু করে এগোতে হবে। তখন এক-একখানি করে বই ধরছি আর কুড়ি-পঁচিশখান। করে ছবি এ কে যাচ্ছি। তাই যখন হল, কিছুকাল গেল এমনি । তখন কি আর ছবির জন্য ভাবি ? চোখ বুজলেই ছবি আমি দেখতে পাই—তার রূপ, তার রেখা, মায় প্রত্যেক রঙের শেড পর্যন্ত । তখন ষে \ల a t অ ১/২ a
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩২২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।