থাকি, একটা টিয়ে পাখি কিনলুম, তাকে ছোলা ছাতু খাওয়াই, মেয়ের মাও খাওয়ায়। পাখিটাকে বুলি শেখাই। দুঃখ ভোলাবার সাথি হল পাখির ছানাটা ; নাম দিলেম তার চঞ্চু, মায়ের কোলছাড়া টিয়াপাথির ছান । সে সময়ে ঘুড়ি ওড়াবারও একটা নেশা চেপেছিল। পাশের বাড়ির মিসেস হায়ার বলে এক বুড়ি ইহুদি মেমসাহেবের সঙ্গে আলাপ হল । আমাকে খুব যত্ন করতেন, কতরকম রান্না করে খাওয়াতেন। র্তার সুন্দর একটি বাগান ছিল ; ছাগলের জন্য দিব্য বেড় দিয়ে ঘেরা পাহাড়। খুব বড়ে ঘরের সেকেলে, ইহুদি পরিবার। মায়ের সঙ্গে বুড়ি ইহুদি মেমের কথা হত ; মাঝে মাঝে আমার জন্যে ভালো সুগন্ধি তামাকও পাঠাত। সেখানে তো এমনি করে আমার দিন যাচ্ছে । সে সময়ে মেজোমার কাছে যাওয়া-আসাতে হ্যাভেল সাহেবের সঙ্গে আলাপ হয়। একদিন মেজোম আমাকে ধরে বসলেন, ‘তোমাকে আর্টস্কুলে• যেতে হবে। হ্যাভেল তোমাকে ভাইস-প্রিন্সিপাল করতে চান।” আমার তখন কি কাজকর্ম করবার মত অবস্থা ? আমি সাহেবকে বললুম সে কথা । তিনি আমার জ্যেষ্ঠের মতন ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, তুমি করছ * f You do your work—your work is your only medicine. তুমি তোমার কাজ করে, কাজই তোমার ওষুধ । তাকে চিরকাল গুরু বলে শ্রদ্ধা করেছি, জ্যেষ্ঠের মতো ভক্তি করেছি কি সাধে ? তিনিও আমাকে collaborator, সহকর্মী, বলে ডাকতেন আদর করে। কখনো চেলাও বলেছেন। ছোটো ভাইয়ের মতো ভালোবাসতেন। স্বামি নন্দলালকে যতথানি ভালোবাসি তার বেশী তিনি আমাকে ভালোবাসতেন । সে তো গেল, কিন্তু আমি চাকরি করব কী ? ঠিক সময়ে হাজির দিতে হবে, এ দিকে দিনে সাতবার করে তামাক খাওয়া আমার অভ্যাস, তার উপরে শরীর তখন খারাপ। মাকে বললুম, সে-আমি পারব না মা, তুমি যা হয় বলে। সাহেবকে ' সাহেব ইংরেজের বাচ্ছা, নাছোড়বান্দা। বলে পাঠালেন মাকে, “তোমার ছেলের সব ভার আমার। তার মুখস্বাচ্ছন্দ্যের কোনো অভাব হবে ন। দুপুরে আমি তার খাওয়ার ভার নিলাম, তামাক সে যতবার ইচ্ছে খাবে। আমি বলছি আমি তার শরীর ভালো করে দেব। কিছুতেই ছাড়ে না, আমাকে রাজি হতেই হল। কিন্তু ভয় হল আমি শেখাব কী ? নিজেই বা কী জানি। সাহেব তাতেও বললেন, ‘সে আমি দেখব’খন। তোমার কিছু ভাবতে হবে \Ֆ- Գ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।