যাচ্ছে পালকির নীচে দিয়ে। জলে ফসফরাস, ঢেউ আসে যায়, যেন একটা আলো চলে যায়। মনে হয় সমুদ্রের উপর দিয়ে ভেসে চলেছি, দানবরা কাধে করে নিয়ে চলেছে আমায়। এইভাবে চলবার পর আবার একটা পালকি হু হু করে চলে গেল সামনে দিয়ে কোনারকের মন্দিরের দিকে, সঙ্গে আবার লণ্ঠন ! ও কী, পালকি ও দিকে কোথায় গেল! নেমে দেখলুম আমাদের চারটে পালকি ঠিকই আছে। তবে ওটা কী ? বেহারারা ওই এক কথাই বলে, ‘দেখে না বাবু, তুমি শুয়ে পড়ে । কী দেখলুম তা হলে ওটা ? মরীচিকা না কী কে জানে, তবে দেখেছিলুম ঠিকই । সকাল হয়ে গেছে, ভয় নেই। মণিলালদের জিজ্ঞেস করলুম, দেখেছ কিছু ? বললে, “না।" - ভূতুড়ে কাণ্ড দেখে কোনারকের মন্দিরে পৌছলুম। মেয়ের নেমেই মন্দির দেখবে বলে ছুটল । কোনারকের মতো অমন স্বন্দর সমুদ্র পুরীর নয়। গেলুম ধারে, আহ, যেন আছোয়া বালি শাদা জাজিমের মতো বিছানে!, তার কিনারায় নীল গভীর সমুদ্র। মানুষকে কাছে যেতে দেয় না। যেন বিরাট সভা, মানুষ সেখানে প্রবেশ করতে পারে না সহজে ীি তার ও দিকে সোনার ঘটের মতো স্থর্য উঠছে, সামনে স্থর্য-মন্দির। সুর্যোদয়ের আলোটা পড়ে এমন ভাবে, যেন স্থর্যদেব উঠে এসে রথের শূন্য বেদি পূর্ণ করে বসবেন । সব তৈরি, এবার রথ চললেই হয়। বুঝেই ঠিক জায়গায় ঠিক রথটি নির্মাণ করেছিলেন শিল্পীরা। মন্দিরও বড়ো ভালো লেগেছিল । কী তার কারুকাজ ! ওই দেখেই তো বলেছিলেম ওকাকুরাকে, “ষাও, স্থর্যমন্দির দেখে এসো। মন্দিরের সামনে বালির উপরে পড়ে আছে একটি মূতি, আধখানা বলির নীচে পোতা—যেন পাষাণী অহল্যা পড়ে আছে মন্দিরের দুয়ারে । অহল্য৷ আঁকতে হলে ওই মূর্তিটি এ কে । সারা দিন কোনারকের মন্দির দেখে ডাকবাংলোতে থেকে • বেলা কাটিয়ে বিকেল তিনটের সময় পালকি ছাড়লুম। আসছি আসছি। ফিরতি পথের শোভ, দূরে মৃগযুথ সব চলেছে—থেকে থেকে এক-একবার দাড়ায় শিং তুলে, ঘাড় ফিরিয়ে। সে ছবি একেছি। এইরকম চলতে চলতে আবার নিয়াথিয়। 'wRY Ծt ֆկՀ Տ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।