নদী পার হয়ে এলুম। সদ্ধে হয়ে এল, দেখলুম জগন্নাথের মন্দিরের ঠিক পিছন দিকে স্থর্য অস্ত যাচ্ছে। ঝপ করে পালকি নামিয়ে দিয়ে বেহারীরা জগন্নাথের মন্দির ছাড়িয়ে অনেক দূরে চুড়োর উপরে প্রকাশ পাচ্ছে যে স্থর্য তারই দিকে তাকিয়ে দু-হাত জুড়ে প্রণাম করে বললে, ‘জয় মহাপ্রভু ! জয় মহাপ্রভু !’ কিন্তু সত্যি বলব, এত স্বন্দর স্বন্দর মূর্তিগুলো দেখে লোভ হত। মনে হত রাবণের মতো কোলে করে ঘরে নি ষাই তাদের। সেই যে বালুর চরে আধখানা পোত নায়িক শুয়ে আছে আকাশের দিকে চেয়ে, দানবের শক্তি পেলে তুলে নিয়ে আসতুম। একবার সত্যি সত্যিই মূর্তি চুরি করতে গিয়েওছিলুম। সংগ্রহের বাতিক চিরকালেরই তা তো জান ? সমুদ্রের ধারে পাথর পড়ে থাকে, যেতে আসতে “দেখি, খেয়াল করি নে তেমন। একদিন তুলিয়াদের দিয়ে পাথরখানা ঘরে নিয়ে এলুম, দেখি তাতে ভৈরবী কাটা । মা বললেন, ‘এ ভালো নয়, কোনো ঠাকুরটাকুর হবে । পুরীর মাটিও ঘরে নিয়ে যাওয়া দোষ। ও তুই ফিরিয়ে দে যেখানকার জিনিস সেখানে । পরে এক সাহেব নিয়ে গেল তা, আমার ভাগ্যে হল না। কী আর করি ? মূতি ভাগ্যে নেই, কুড়িটুড়ি সংগ্রহ করে বেড়াই। জগন্নাথের মন্দিরেও ঘুরি রোজ। নাটমন্দিরের ধারে ছোট্ট একটি ঘর, ছোট্ট দরজা, বন্ধই থাকে বেশির ভাগ। পাণ্ড বললেঃ ভোগমুতি থাকে এখানে । জগন্নাথের বড়ো মূর্তি সব সময়ে নাড়াচাড়া করা যায় না, ওই মূতি দিয়েই কাজ চালায়। সে ঠিক ঘর নয়, একটি কুঠরি বললেই হয়। বললুম, “দেখতে চাই আমি ।’ পাণ্ড দরজা খুলে দিলে। দেখি চমৎকার চমৎকার ছোট ছোট্ট মূতি সব। দেখেই লোভ হল । ছোটো আছে, নিয়ে যাবারও স্ববিধে । পাণ্ডাকে জিজ্ঞেস করলুম। সে বললে, হবে না, ও হবে না বাৰু। ফুসলে ফাসলে কিছু যখন হল নী, দেখি তা হলে হাতানো যায় কি না কিছু। ঘুরে ঘুরে সব জেনে শুনে সাহসও বেড়ে গেছে । তখন স্নানযাত্রা । জগন্নাথকে নিয়ে রথ চলেছে, সবাই সেখালে, মন্দির খালি। আমার মন পড়ে আছে ছোটো ছোটো মূতিগুলোর উপর। আমি চুপি চুপি মন্দিরে ঢুকে সোজা উপস্থিত সেই পুতুলঠাসা কুঠুরির কাছে, দেখি রজ খোলা, ভিতর অন্ধকার। মন্ত স্থবিধে এবার চৌকাঠ পেরোলেই হয়। স্কিার দেরি নয়। দরজার কাছে গিয়ে উকি দিয়েছি কি অন্ধকার থেকে এক હરર
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।