ইনি যাহার সহিত আড়ি করবেন তাহার সহিত আর কোনো ছেলে খেলিবে না । ইনি যাহা বলিবেন তাঁহাই শুনিতে হইবে, না শুনিলে অমনি আড়ি । কেহ আর তোমার সহিত খেলিবে না, কেহ আর তোমার সহিত কথা পর্যন্ত কহিবে না । আমাদের বাগান-নিৰ্মাণ এক সময়ে আমাদের মধ্যে কোনো-একজন কতকগুলি টিনের হাস জোগাড় করিয়াছিলেন । খেলা করিতে করিতে সকলের মত হইল, চলো, একটা পুকুর করা যাক, তাহাতে হাস ভাসানো হইবে । সকলে অমনি পুকুরনির্মাণকার্যে ব্যস্ত হইল। আমাদের বাগানের পাশে একটা গর্ত খোড়া হইল এবং তাঁহাতে একটি ষ্টাড়ি পুরিয়া তাহাতে জল ঢালিয়া পুকুর নির্মাণ হইল। তাহাতে হাস ভাসিতে লাগিল। কী আনন্দ ! কিন্তু শুধু পুকুরে সন্তুষ্ট না হইয়। আমরা তাহার চারিধাবে বাগান করিতে আরম্ভ করিলাম। অতি যত্নে ক ত গাছের ডাল আনিয়া বসাইলাম, কত যত্নে তাহাতে জল দিলাম। একটি গাছ শুকাইলে আর-একটি গাছ আনিয়া বসাইলাম । সেই বাগান লইয়া কতদিন খেলিলাম। কিন্তু এখন সে বাগান কোথায় গেল ? সেই জায়গাট আমি এখনো চাহিয়া চাহিয়৷ দেখি– সেখানে কিছুই নাই, কেবল একটা ভাঙা টব আর একটা মাটির ঢিবি পড়িয়া আছে। আমাদের স্কুল দিনকতক আমাদের আবার একটা স্কুল হল । ও-বাড়ির পাশে একটা লম্বী তক্ত পড়িয়া ছিল, সেই তক্তাখান কতকগুলো ইটের উপর দিয়া আমাদের বেঞ্চি হল । দীপুদাদা মাস্টার হইলেন । এই স্কুলে পড়া যত হোক না-হোক জল খাওয়াটা খুব চলিত। একটা কুঁজোয় জল পোরা থাকিত, আমরা কেবল বলিতাম— মাস্টারমশায়, জল থেয়ে আসব। মাস্টারমশায় অনুমতি করিলে জল খাইয়া আসিতাম। এইরূপে আমাদের স্কুল জীবন কাটিয়t গেল । Ψ28Φ.
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।