হলদে, কালে নতুন রকমের বিলিতী টালি কেটে কেটে বসাচ্ছে মেঝেতেঠকঠাক খিটখাট ছেনির শব্দ হচ্ছেই সেখানে সারাদিন । ঘরট যেদিন খুলল দুয়োর, সেদিন দেখি সেখানে সবক’টা জানলা.দরজার মাথায় মাথায় সোনার জল করা কানিস বসে গেছে, আর সেগুলো থেকে ফুলকাটা ফিনফিনে পর্দা জোড়া জোড়া ঝুলছে, সবজে আর সোনালি রেশমে পাকানো মোট দড়ীর ফাসে লটকানো। ঘরজোড়া পালঙ আয়নার মতে বানিশ করা । ঘরটার পশ্চিমমুখে জানলাটা খুলে তার ওধারটাতে বানিয়েছে অক্ষয় সাহ ইঞ্জিনিয়ারবাবু একটা গাছঘর, কাঠ আর টিন আর ঘষা কাচের সার্সি দিয়ে। সেখানে দেওয়ালগুলো আগাগোড়া গাছের ছালের টুকরো দিয়ে মুড়ে ভাগবত মালী লটকে দিয়েছে লব বিলিতী দামী পরগাছ । কোনোট। সাপের ফণার মতে বাক, কোনোটার লম্বা পাতা দুটো সাপের খোলসের মতো ছিটু দেওয়া ডোরাকাটা । কিন্তু এর একট পরগাছাতেও ফুলফল কিছুই নেই, কোনোটাতে ব। পাতু ও নেই, কেবল সেটা আর কাটা । এই গাছঘরের মাঝে একটা তিনফুকোর দালানের মতে খাচী । তারের টেবিলে তাতে •হলদে রঙের এক জোড়া কেনেরি পাখি ধরা থাকে । শোবার ঘরটা তখনো নিজের সাজ সম্পূর্ণ করে নি ফুলদানি ইত্যাদি দিয়ে। শুধু সরু পাথরের তাকের সঙ্গে আঁট গোল চুল-বধার আয়নাখানা মায়ের রয়েছে একটা দিকে ! এই আয়নাখানাকে ঘিরে মিহি গিলটির পাড়, তাতে সবজে আর শাদ মিনকারি দিয়ে নকশাকরা জুইফুল আর কচি পা শুর একগাছি গোড়ে মালা । আর এরই সামনে স্ফটিক কাটা চৌকোনো একটি ফুলদানির মাঝখানে সোনার বোটাতে আটকানো যেন বরফ-কুঁচি দিয়ে গড় ভুইচাপা— সোনার ডাটি তাকে নিয়ে ঝুকে পড়েছে। জলের মতো পরিষ্কার আয়নার দিকে চেয়ে ফুল দেখছে ফুলের একখানি ছায় স্থির হয়ে ! э а
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।