পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যে ভদ্রলোক চ খেতে এসেছিলেন তিনি তো গেলেন চলে খাতির-ষত্ব পেয়ে ; কেদারদাদাও গেলেন শিকদারপাড়ার গলিতে ; কিন্তু ব্যাপটাইজ কথাটা আমার আর কাছ-ছাড়া হয় না। রুটিখানা হজম হয়ে যাবার অনেক অনেক ঘণ্ট। পরে পর্যস্ত আমার মনে কেমন একটা বিভীষিকা জাগতে থাকল। কারে কাছে এগোতে সাহস হয় না ; চাকরদের কাছে তোষাখানায় যাই, সেখানে - দেখি রটে গেছে ব্যাপটাইজ হবার ইতিহাস ; দপ্তরখানায় পালাই, সেখানে যোগেশদাদা মথুরদাদাকে ডেকে বলে দেন আমি ব্যাপটাইজ হয়ে গেছি। এমনি একদিন দুদিন কতদিন যায় মনে নেই, একলা একল। ফিরি, কোথাও আমল পাই নে, শেষে একদিন ছোটো পিসিম আমায় দেখে বললেন, “তোর মুখটা শুকনো কেন রে ? মনের দুঃখ তখন আর চাপা থাকল না—“ছোটো পিসিম, আমি য্যাপটাইজ হয়ে গিছি। ছোটো পিসি জানতেন হয়তে ব্যাপটাইজ হওয়ার কাহিনী এবং যদি বিনা দোষে কেউ ব্যাপটাইজ হয় তো তার উদ্ধার হয় কিসে, তাও তার জানা ছিল, তিনি রামলালকে একটু গঙ্গাজল আমার মাথায় দিয়ে আনতে বললেন । চলল নিয়ে আমাকে রামলাল ঠাকুরঘরে ৷ পাহারাওয়ালার সঙ্গে যেমন চোর, সেইভাবে চললেম রামলালের পিছনে পিছনে নানা গলি ঘুজি উঠোন সিড়ি বেয়ে পৌছতে হচ্ছে ঠাকুরঘরে— যেতে aযতে দেখছি অন্দর বাড়ির লাল টালি বিছানো ছোট উঠোন জল দিয়ে সবেমাত্র ধোয়৷ হয়েছে । সেই উঠোনের পশ্চিমের দেয়ালে একটা গরাদে আঁটা ছোটো জানালা, তারি ও-ধারে অন্ধকার ঘর, তারি মধ্যে কালো একটা মূর্তি বড়ে বড়ো মেটে জালার মুখ খুলে কী তুলছে। পায়ের শব্দ পেয়ে মূর্তিটা গোল দুটাে চোখ নিয়ে আমার দিকে কটমট করে চেয়ে দেখলে। এর অনেক কাল পরে জেনেছিলেম এ লোকটা আমাদের কালীভাণ্ডারী—রোজ এর হাতের রুটিই খাওয়ায় রামলাল । কালী লোক ছিল ভালো, কিন্তু চেহারা ছিল ভীষণ । আলিবাবার গল্পের তেলের কুপে আর ডাকাতের কথা পড়ি আর মনে পড়ে এখনো কালীর সেদিনের চোখ, গরাঙ্গে আঁটা ঘর জাঁর মেটে জাল । উঠোন থেকেই দক্ষিণধারে রান্নাবাড়ির ছাদের উপর দেখা যায় ঠাকুরঘরের খানিকট অংশ। কিন্তু সোজা রাস্ত ছিল না সেখানে পৌছনর উত্তর woowo আ ১॥২৩