আমাদের সেকালের পুজে আমাদের ছেলেবেলায় পুজে আসত। কয়লাহাটার রাজ রমানাথ ঠাকুরের বাড়িতে তখনে পুজো হচ্ছে। আমাদের বাড়িতে পুজো না থাকলেও পুজোর আবহাওয়া এসে লাগত আমাদের বাড়িতে । পুজোর আগেই আসত চীনেম্যান— বার্নিশ করা নতুন জুতোর জন্যে পায়ের মাপ নিতে। সব বাড়ির ছেলেরা মিলেই পায়ের মাপ দিতুম। অবাক হতুম তার মাপ নেওয়ার কায়দা দেখে। এক টুকরো লম্বা ফালি কাগজ নিয়ে সব ছেলেদের একবার পায়ের লম্বা আর একবার বেড়ট মেপে নিয়েই ছেড়ে দিত। মাপ নেওয়ার ওই রকম যত্ন দেখে মনে আশঙ্কা হত যে জুতো কোনো দিন এসে পৌছবে কি ন । কর্তাদের চোখের আড়ালে চীনেম্যানের গ ঘেসে জিজ্ঞেস করতুম— জতো কবে আসবে বলে না ! ভালো করে মাপ নিয়েছ তো ? ফেস্কি পড়ে না যেন এমন জুতো তৈরি করে দিয়ে ৷ নাকী স্বরে চীনে সাহেব বলত, ঠিক হেঁাবে, বালো জুতো হেঁাবে ।’ চীনেম্যান বলে নাক কুঁচকে ঘেন্নায় অবহেলা করবার জো ছিল না। একবার কে যেন বলেছিল, চীনেম্যান চুং চ্যাং, মালাইকা ভট্। তার জন্য তার ভয়ানক বকুনি হয়েছিল। আমাদের বাড়িতে তার আদর ছিল খুব। সৌম্যমূর্তি চীনেম্যান আর তার হাস্যমুখ এখনো মনে পড়ে। তারপর আসত দরজি। তার নামটা ভুলে গেছি। যতদূর মনে পড়ে ‘আবদুল । তার মাথায় গোল গম্বুজের মতে একটা মস্ত শাদা টুপি । গায়ে সামনে-বোতাম-দেওয়া দিব্যি ধবধবে শাদাচাপকান, মস্ত ভূড়ি । পিঠে কাপড়ের পুষ্ট্ৰলি । তার কাছে দিতে হত সক্কলের জামার মাপ। জামা তৈরির কাপড় জোগানের ভারট। সেই নিত। সবুজ কিংখাপের থান, তার ওপর সোনালি বুট—সেটাই ছিল ছেলেদের সকলের পছন্দ ; সেই থান থাকত তার বগলে— সেই কাপড় থেকে ছেলেদের একটা করে চাপকান সকলের তৈরি হত। সব ছেলেদের একরকম পোশাক। আর ওই কাপড়েরই জরি দেওয়া অধচন্দ্রাকৃতি টুপিও একটা সকলেই পেতুম। এই হল পুজোর পোশাকের পালা। পোশাকের পাল চুকে গেলে আসত গিঞ্জেল সাহেব। ইহুদী সাহেৰ wo@ፃ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।