রবিকাকার পুষ্ঠিপুত্তর সে যা এক মজার গল্প, রবিকাকার এক পুষ্ঠিপুত্তর জুটেছিল জানো সে কথা ? তখন রবিকাকার সবে বিয়ে হয়েছে, দোতলার ঘরে থাকেন। ঘরের পাশে আর একটা ছোটোঘর বানিয়ে নিলেন। তাতে ছোটো ছোটো তক্ত দিয়ে সাজিয়ে বেশ বসবার ঘর বানিয়েছেন। সেখানেই তার যাবতীয় বই থাকে, লেখবার নিচু ডেস্ক, তাতেই মাটিতে বসে লেখাপড় করতেন। এমন সময়ে একদিন একটা ছোকরা ছেড়া ময়লা জাম-কাপড়, উস্কোখুস্কো চুলে কাকীমার কাছে এসে উপস্থিত। বললে, স্বপ্নে নাকি দেখেছে কাকীমা ওর পূর্বজন্মের মা ছিলেন, আদেশ হয়েছে রোজ চরণামৃত খেতে হবে কিছুকাল ধয়ে, গড় হয়ে এক প্রণাম । সে আর নড়ে না, কোথাও যাবে না। কাকীমার মায়া লাগল, মা বলে ডেকেছে, বললেন, আচ্ছা বাবা থাকো এখানেই। রবিকাক আর কী করেন, রাজী হলেন । লোকটা রোজ কাকীমাকে পেন্নাম করে পাদোদক খায়। বেড়ে আছে, রবিকাকা আর কাকীমা ওকে কাপড়চোপড় কিনে দেন, এটা ওটা দেন । দিব্যি ঘরের ছেলের মতো থাকে। এখন তার সাজসজ্জাও কী পরিপাটি, উস্কোখুস্কো চুলে তেলজল পড়ল, তাতে সিথি কেটে কোচানে ধুতি চাদর পরে ক্রমে ক্রমে সৈ কাকীমার ছেলে হয়ে উঠল । আগে থাকত নীচে দপ্তরখানায়, এখন দোতলায় উঠে গেল। পাদোদক পান করে একেবারে পদবৃদ্ধি হয়ে গেল । বাড়ির সবাই রবিকাকার পুস্তিপুত্তরের উপর মহা বিরক্ত। অথচ কেউ কিছু বলতে পারে না। সত্যদাদা ছিলেন রবিকাকার ভাগ্নে, সম্পর্কে ভাগ্নে হলেও বয়সে বড়ে ছিলেন। তিনি না পেরে মাঝে মাঝে বলতেন, রবিমামা এ তুমি করছ কী । ও লোকটার হাবভাব সুবিধের নয়। রবিকাকা তাকেও তাড়া লাগাতেন, বলতেন, যাও যাও, তোমাদের যত সব বাজে ভাবনা, বেচার গরিবের ছেলে, বাড়িতে আছে তাকে নিয়ে তোমরা কেন লাগতে যাও । কারো কথায়ই কান দেন না। সত্যদীদ ছাড়তেন না, মাঝে মাঝে বলতেন আর রবিকাকাও তাড়া লাগাতেন । রবিকাকার তখন সংস্থান বেশি ছিল না। কর্তাদাদামশায় কিছু দিতেন আর বই থেকে কিছু অল্পস্বল্প আয় হত, সে আর কতই-বা। \రిఆు
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।