শিশু-বিভাগ সেই সেবার এসেছি শাস্তিনিকেতনে, দু-চার দিন থেকেই চলে যাব। তখন ছিল ওই– আসতুম আর চলে যেতম। এখনই হয়েছে এলেই আটকা পড়ি। তা সেবার যাবার দিন ভোরবেলায় উঠে সবে ঘুরে বেড়িয়ে দেখছি। ছোটে ছেলেরা যেমন এখন, তখনে তেমনি। রাস্তায় বেরলেই হাত ধরে টানত ? ‘আমাদের কাছে আমুন, আমাদেব গল্প বলুন। কয়েকটা ছেলে এসে আমায় টানতে টানতে নিয়ে গেল। তখন সবে শাস্তিনিকেতনে শিশু-বিভাগ খোল । হয়েছে। ওই তোমাদের কলেজ বাড়ির কাছেই ছিল সেট। গেলুম। কোন এক মেমসাহেব শিশু-বিভাগের ভার নিয়ে আছেন। সেখানে ঢুকেই দেখি নীচের তলায় একটা ছেলে একটা তক্তাতে পেরেক ঠুকছে। ঠুকছে তো ঠুকছেই– পেরেক ঠকতে ঠকতে ছেলেট গলদঘর্ম হয়ে গেল, কিন্তু পেরেক ঢুকছে না তক্তাতে । পেরেকে ঠোকার কায়াটা একটু দেখিয়ে-টেকিয়ে দিতে হয়। অমনিই একটুকরে কাঠ আর হাতুড়ি দিয়ে দিলেই হয় না। দাড়িয়ে দাড়িয়ে খানিক দেখে জিজ্ঞাসা করলুম, কী করছিস ? ছেলেট বললে, ‘পেরেক ঠুকছি মশায়। বেশ ডাক ছিল, এখনই যত সব আদুরে নাম বৈর হয়েছে। তা ছেলেটাকে বললুম, কতক্ষণ ধরে পেরেক ঠুকছিল ? সে বললে, সকাল থেকে, কিন্তু হ:ছ না যে মশাই, কী করি ? বললুম, এক কাজ কর দিখিনি, তালে তালে মার। এক হাতে পেরেকটা ধর আর বল এক দুই তিন— আর মার হাতুড়ি। ব্যস ছেলেট এক দুই তিন করে যেই হাতুড়ি পেট, পটু করে পেরেক তক্তায় ঢুকে গেল। আর তাকে পায় কে ? তার পরে গেলুম উপরের তলায়। সেখানে নানা রকমের আয়োজন করে মেম নেচার স্টাডি ( Nature Study) oftwa খাচায় খরগোস, টবে গাছ, শিশু-শিক্ষার সরঞ্জামে সব ভর্তি। কিণ্ডারগার্টেনের মতে যেমন ওদেশের শিশুদের জন্য করা হয়। সব দেখেশুনে তো ফিরে এলুম। , রবিক তখন থাকতেন এখন যেখানে সেবক যমুনা আছে সেই বাড়িতে। ঘরে বসে তিনি লিখছিলেন। দরজায় কাঠের রেলিং দেওয়া, যেন কুকুরবেড়াল চট্ করে ঢুকতে না"পারে। পোস্টাপিসে দরজায় যেমন তেমনি, \ጋፃ »
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।