পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२ তখনকার দিনে গুরুজনদের ছিলেন তিনি বড়দাদা, পাড়াপড়শী সকলের বড়োবাবু এবং আমাদের জোড়াসাকোর ছেলেমেয়েদের তিনি বড়ো জ্যাঠামশায়। তখন নাম ধরে এ-বাৰু সে-বাবু ডাকার রীতি ছিল না। সেই আমাদের ছেলেখেলার বয়স। সেকালের তার চেহার কালে চুল, কালো গোফ, ফিট গৌরবর্ণ, দাড়ি নেই, শালের জোব্বা গায়ে—এই মনে আছে । মাঝে মাঝে বালকদল ও-বাড়ির তেতলায় তার ঘরটায় উকি দিতেম— মস্ত একটা অর্গান, একটা ফুলোট বাশি, লেখার টেবিল, খাতাপত্র । ঘরের একধারে মস্ত একখানা খাট, তার চার খাম্বায় চারটে পরী, ছতরির উপসে একটা পাখি দুই ডানা মেলিয়ে যেন উড়ি উড়ি করছে। খাটখানা রাজকিষ্ট মিস্ত্রি গড়েছিল কর্তাদিদিমার ফরমাস মাসিক। যখন গড় শেষ হয়েছে তখন কে বললে, "কর্তামা, চালের উপরে চিল বসিয়েছ যে ?’ ‘চিল কেন, শুকপাখি।” সেই খাট বিয়ের দিনে উপহার বড়ে জ্যাঠামশায় পেয়েছিলেন জানি । অনেকদিন পর্যন্ত খাটখান ও-বাড়িতেই ছিল— এখন আর দেখতে পাই নে। বড়োবাবুর হাসি পাড়া-মাতানো ! যারা শুনেছে, তারা শুনেছে— হাসিসমুদ্র যেন তোলপাড় করছে, থামতেই চায় না। এই সময় ‘স্বপ্ন-প্রয়াণ লেখা ও শোনানো চলেছে— করিয়া জয় মহাপ্রলয়, বাজিয়া উঠিল বাজনা নানা ; তালবেতাল দিতেছে তাল ধেই ধেই নাচে পিশাচ দান । আবার— গাধায় চড়ি, লাগায় ছড়ি অদ্ভুত রস কিম্পুরুষ। দুটি অধরে হাসি না ধরে লম্বা উদর বেঁটে মানুষ ॥ এগুলো ছড়ার মতে মুখে মুখে আউড়ে চলেছি। বাংলা ভাষায় এমন স্বচ্ছন্দতা আর-কোনো কবিতায় পাই নে। ●ፃፃ