পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বড়ো হয়ে জ্যাঠামশায়ের বক্তৃতা সে আর-এক ব্যাপার। ‘আর্যামি ও সাহেবিআনা’র জলদগম্ভীর ধ্বনি ও ভাষার মাধুর্য লোকের মনকে একেবারে দু-তিন ঘণ্টার মতে মুগ্ধ করে রাখত। তার অগাধ পাণ্ডিত্য সকলের শ্রদ্ধা আকর্ষণ করত এবং বালকসুলভ সরলতা ও মন-ভোলা অবস্থা বন্ধুজনের কাছে র্তাকে প্রিয়তর করেছিল। তখনকার রীতি বড়োদের কাছে ছেলেদের ঘোষ৷ অপরাধ— মৃতরাং আমরা নিজেদের বঁাচিয়ে চলতেম। - ছবি আঁকার দিকে তার খুব বোক ছিল । কুমারসম্ভবের ছবি, শকুন্তলার ছবি, সব আর্টিস্টদের দ্বারা আঁকিয়ে আমার পিসিমাদের উপহার দিয়েছিলেন। সেইগুলো তখনকার আর্ট স্টুড়িওর নমুনা। বঙ্কিমবাবু স্বর্যমুখীর ঘরের যে বর্ণনা দিয়েছেন তাতে অনেকগুলো সেই ছবির কথা আছে। কথায় কথায় একদিন বড়ো জ্যাঠামশায় বললেন, “দেখ, আমি আর্টিস্টদের ছবি ফরমাস দিলেম কুমারসম্ভব থেকে বেছে বেছে, তারা যখন একে আনলে, দেখি ইয়ে করতে ইয়ে ক’রে এনেছে।’ বলেই অট্টহান্ত । খানিক চুপ করে থেকে বললেন, ‘তুমি মেঘদূতের যে ছবি একেছ তা দেখেছি, ইউরোপীয়ান আর্টিস্টদের মতে গোটাকতক মাস্টারপিস আঁকতে পারে তো বুঝি r প্রবাসীতে ‘চিত্রষড়ঙ্গ’ লিখছি, জ্যাঠামশায়ের কেমন লাগে জানবার ইচ্ছে হল। খাতা উলটে-পালটে দেখে বললেন, সাধারণ লোক ভালোই বলবে, কিন্তু পণ্ডিতের হাতে,পুড়লেই গেছ।’ বলেই অট্টহাস্ত ! বয়সের পারে প্রায় এখন পোঁচেছি। অনেক সেকালের কথা মনে আসে, মুখে মুখে অনেক কথা শোনাতে পারি— লিখতে গেলে সব কথা কলমে সরতে চায় না । \3ՊԵ