পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমি হলেম রূপকার, স্থতির মর্যাদা আমার কাছে অনেকখানি এবং রূপকার বলেই আমি জানি সে স্কৃতিকে রূপ দেওয়া কতখানি কঠিন ব্যাপার সাধারণ সভায় দাড়িয়ে । উত্তরচরিতের চিত্রদর্শন নামে প্রথম অঙ্কে লক্ষ্মণ যখন অতীত ঘটনার নানা স্মৃতি দিয়ে লেখা একরাশ ছবি এনে রামচন্দ্রের কাছে উপস্থিত করলেন তখন রামচন্দ্র প্রথমেই বললেন—‘জানাসি বৎস দুর্ননায়সানাং দেবীং বিনোদয়িতুং। চিত্তবিনোদনকারী করে স্মৃতিকে ধরা ক্ষমতা-সাপেক্ষ, রূপদক্ষ না ' হলে পদে পদে সে কাজে ঠেকতে হয় । ছবির বিষয় কী কী রাম জানতে চাইলে লক্ষ্মণ বলেছিলেন—‘যাবদার্থায় হুতাশনে বিশুদ্ধি: রাম ওই শুনে বললেন শাস্তম্ । কিন্তু আবার যখন মিথিলা বৃত্তান্তের ছবিগুলি লক্ষ্মণ সামনে ধরলেন তখন রাম বললেন “দ্রষ্টব্যমেতৎ’ । আবার এক জায়গায় এসে স্মৃতি ধরে চলার আনন্দে বাধা পড়ল, রাম বলে উঠলেন—‘অয়ি বহুতরং দ্রষ্টব্যমস্তি অন্যতো দশয় । কাজেই বলতে হচ্ছে ছবি দিয়েই স্মৃতি ব্যক্ত করি বা লেখা দিয়েই খুলে বলি কোনো পথেই আমরা একেবারে নিরাপদ নয়। স্থতির বস্তু যা তা অত্যন্ত স্বকুমার, সন্তপণে তাকে নিয়ে নাড়াচাড়। অবগুষ্ঠিত ভাবে রয়েছে যে স্থতি তাকে ঘোমটা ছিড়ে অকাতরে সবার মাঝে টেনে আনায় তারি একটা নির্মমতা আছে। ফুলের কলি ছিড়ে তার গৌরভ বার করে আনতে গিয়ে ফুলকেও নষ্ট সৌরভকেও হত করে বসি এ কথা রূপকার হয়েছে যে সেই বুঝেছে। রামচরিত্রের আগাগোড়া লক্ষ্মণের জানা ছিল । তিনি সেইগুলোই সব আঁকিয়ে এনে উপস্থিত। কিন্তু রামের মন সীতার মন এর মধ্যে কার মনে কোন স্মৃতি আনন্দ দেবে তা তে জানা ছিল না লক্ষ্মণের, কাজেই চিত্র-দর্শনের কাজ সুচারুভাবে চলতে গোল হল ! স্থতিসভাগুলোতেও এই গোলযোগ উপস্থিত হয়। বক্তার মনে শ্রোতার মনে স্বর বাধা নেই, কাজেই পুরোপুরি মর্যাদা পায় না স্মৃতিসভায় কারো স্মৃতি কিছুর স্মৃতি এটা আমি বরাবর অনুভব করেছি, তাই আজও সাধারণের কাছে আমার স্বৰ্গত বন্ধু জগদিন্দ্রনাথের চরিত্র ও জীবনের নানা ঘটনা সম্বন্ধে নীরব থাকতে চাই । এই সরল উদার একান্ত বন্ধুবৎসল এবং দেশের স্বশিক্ষিতদের মধ্যে একজন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির সম্বন্ধে বলবার Wors,