কিছুই নেই আমার। এটা যেন আপনার মনে না করেন। বলবার আছে অনেক কথা। কিন্তু সে সভা-ক্ষেত্রে নয় । কবি আর্টস্ট সাহিত্যিক সবাই মিলে অনেক দিন পূর্বে আমরা একটা খামখেয়ালী মজলিস বেঁধেছিলাম। প্রতি মাসে এক এক বন্ধুর বাড়িতে তার বৈঠক বসত— সেই মজলিসের প্রধান সংগতিয়া ছিলেন মহারাজ জগদিন্দ্রনাথ ! জীবনের বসন্তকালে এইভাবে পেয়েছিলেম বন্ধুকে কটা দিনের জন্ত খুব কাছে। সেই কটা দিনের রূপকথা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনা একটু একটু রসের ইতিহাস সব দিনরাতের— যখন মনে কোনো ভাবনা নেই স্কৃতিই আছে— কিন্তু সে-সব স্মৃতি নিয়ে সাধারণের তো কাজ হয় না, তাই বলি— 甲 “জীবৎক্স তাতপাদেষু নবে দারপরিগ্রহে। মাতৃভিশ্চিন্ত্যমানানাং তে হি নো দিবস। গতা: ॥” কথাই মনে পড়ছে। কিন্তু যাকে নিয়ে কথা সে আজ চলে গেছে দৃষ্টর বাহিরে ৷ “তে হি নো দিবস। গতাঃ , সে-সব দিন চলে গেল সে-সব রাত চলে গেল যখন স্বৰ্গীয় জগদিন্দ্রনাথের উদার সরল বন্ধুবৎসল মনটি থেকে সখ্যরস ধারা দিয়ে পড়েছিল আমাদের মনের পাত্রে। সে-সব দিনকে রাতকে ভোলা যায়না। ফেরানোও যায় না সে কালকে, ধরে দেওয়াও যায় না সে-সব স্থতি যেখানে-সেখানে যেমন-তেমন করে । এই সেদিনে মন চঞ্চল হল, আমার হারানো বন্ধুর স্বজনদের দেখতে গেলাম রাজবাড়িতে। সেখানে পাঠাগার নাচঘর বাগান-ভরা বন্ধুর স্থতি অসংখ্য জিনিসে অসংখ্য ভাবে বন্ধুকে ফিরে পেয়ে মন বললে ‘হমরই এদং পদেসং’ । কেবলি ভুল হয়ে যায় যে বন্ধু সঙ্গে নেই। রাজপুত্রের গলার স্বরে রাজার গলার স্বর পাই, স্মৃতির মালা ছলিয়ে দেয় বুকে অদৃপ্ত আমার বন্ধুর হাত । আজকের যে চলে গেছে তার কথা,কালকের অনেকেরই মনে থাকবে না, কেননা এখানে অনেকেই তো সত্য ভাবে মহারাজ জগদিন্দ্রকে পান নি। ; কিন্তু আমরা যারা তাকে সত্যভাবে পেয়ে গেছি, কোনো স্মৃতিসভা না হলেও আমরা বলতে বাধ্য ‘কথং বিস্মর্যতে ? ভোলার উপায় নেই আমাদের, ভুলে যাওয়ার পথ রাখেন নি তিনি আমাদের । Վ 3յlՀe
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪০২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।