শিল্পী ক্রমান নন্দলাল বস্তু বিচিত্রার চিত্রশালাতে শ্রীমান নন্দলাল বস্থর এই যে ছবিগুলি, এর মধ্যে চার-পাঁচখানি ছাড়া প্রায় সকলগুলিই র্তার ছাত্রাবস্থা উত্তীর্ণ হয়ে যখন তিনি বিশ্বভারতী কলাভবনের অধ্যক্ষ হয়ে ভারত-শিল্প-চর্চার পথ উন্মুক্ত করছেন নতুন নতুন দিকে, নতুন নতুন রস ও ভাবের পন্থী ধরে— সেই কালের কাজের নমুনা । এই চিত্রগুলি থেকে আজকের বাংলার প্রধান চিত্রকরের বাল্য কৈশোর এবং যৌবনাবস্থার চিত্র-রচনা-পদ্ধতির একটুখানি আভাস পাবেন বিচিত্রার পাঠকগণ এবং বাংলার শিল্পীরা যে বহু সহস্ৰ বৎসরের অজস্ত চিত্রাবলীর ব্যর্থ অনুকরণ করে চলেছে সে ভ্রমও দূর হবে সাধারণ দর্শকের মন থেকে। এ দেশের শিল্পীর পূর্বকালে আশেপাশের ঘটনা কালের প্রভাব ইত্যাদি থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে কেবল ধ্যানস্তিমিত অবস্থাতে বসে ছবি মূর্তি ইত্যাদি রচনা করে গেল এ কথা যেমন মিথ্য, আজকের বাংলার শিল্পীর দল আমরাও সেই ভাবে কাজ করে চলেছি এ কথাও তেমনি মিথ্যা, এটা প্রমাণ হবে যে এই ছবিগুলি মনোযোগ দিয়ে দেখবে তারি কাছে। শ্রীমান নন্দলাল বাল্যাবস্থায় যেদিন আমার কাছে এসেছিলেন সেইদিন থেকেই তাকে শিল্প-রসিক বলে আমি ধরেছিলেম। তখন তিনি বালক আমি যুবা ; আজ আমি বৃদ্ধ, তিনি এখনো আমার কাছে সেই যৌবনের প্রতিভাদীপ্ত প্রিয় এবং প্রধান শিষ্যই আছেন। র্তার ছবির তারিখ লিখে আমি তার কাজের মানপত্র দিতে অগ্রসর হই নি কেননা ওরূপ করাতে শিল্পীতে শিল্পীতে উচ্চ নীচ ভেদ যে নাই সেটা অপ্রমাণ হয়ে যায়, অতএব বিচিত্রার এই চিত্রগুলি দেখে আমার আনন্দ হল এইটুকুই জানাই বিচিত্রার সম্পাদককে আর চিত্রকরকে শুধু আশীৰ্বাদ দিই জীবতু শতং জীবতু।
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।