পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নাচঘরের আবহাওয়া -পুজোর দালান উঠান এবং নাচঘর এই ছিল আগেকার আমাদের বাড়ির হিসেব— পুজোবাড়ির সঙ্গে নাটমন্দির এবং বসতবাড়ির সঙ্গে নাচঘরের যোগাযোগ। এখানকার নাচঘর পুজো এবং বসবাসের থেকে পৃথক হয়ে গিয়ে দুয়ের বার একটা এমন জিনিস হয়ে উঠেছে যাকে আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রার অংশ করে নিতে গেলে মুশকিল বাধে। আগে বিয়ের বঁাশি বাজনের সঙ্গে নাচঘরের দরজা খুলত, ঝাড় লণ্ঠনে বাতি জলত, নটীর পায়ের নূপুর তাল রাখত— ঘরে যে-উৎসব সদর-অন্দর জুড়ে হচ্ছে তারি ছন্দে-ছন্দে। পার্বশের দিনে পুজোবাড়ির উঠোন-জোড়া আসরে যাত্র নানা দেবচরিত্র মানবচরিত্র নিয়ে যে হত তার সঙ্গে বাড়ির যারা এবং বাইরের যার, বড়ো যার, ছোটো ষার, ধনী যার, গরিব যারা— সবার যোগ সহজ হয়ে যেত আপন হতেই। বাংলার থিয়েটার এ স্থান অধিকার করতে পারলে না কেন, তার কারণ আর-কিছুই নয়। থিয়েটার জিনিসটা আমাদের নিজস্ব নয়। ওটার স্বষ্টি হয়েছে যে দেশে সে দেশের ওঠা-বস। চালচোল সম্পূর্ণ আমাদের থেকে বিভিন্ন । থিয়েটারের বাড়িগুলো নজর করে দেখলেই এটা বোঝা যায় । শীতদেশের স্থালয় চারিদিকে ঘের-ঘোর যথাসম্ভব বায়ু চলাচলের পথ বন্ধ করে শাখ আর আমাদের নাচঘর নাটবাড়ি— সেখানে দক্ষিণ-বাতাসের অবাধ -গতিবিধি ; আকাশের নীল চন্দ্রাতপ— তারি তলায় আমাদের উৎসবের অঙ্গন নির্দিষ্ট ছিল। বাংলার রঙ্গালয়ের দরকার পড়তেই বাঙালি সেট নির্বিচারে গ্রহণ করলে ইউরোপ থেকে, দেশের হাওয়ার উপযোগী করে নেবার চেষ্টাও করল না সেটাকে । আমাদের প্রায় সব রঙ্গালয়ই দক্ষিণ-মুখে কিন্তু দক্ষিণ হাওয়া বইবার পথ দেখি সব কটাতেই বন্ধ। এই অন্ধকূপের মধ্যে নটনট দর্শক প্রদর্শক মায় নাট্যকথা অল্লে-অল্পে দম আটকে মরতে চলেছে এট দেখতে পাচ্ছি। কাজেই রঙ্গমঞ্চে রক্ষালয়ে যে দূষিত হাওয়া, তার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়— এ কথা আমার দেবতা আমায় উপদেশ দিচ্ছেন। কিন্তু যদি রঙ্গালয়এলো ঠিকমত হত অর্থাৎ এদেশের উপযোগী হত, যদি বাতাস বইত VSU