ভিড় করে দাড়িয়ে কর্তার মজলিসের কাওধান সত্যি দেখেছে তাদের মুখে ८ञोंनों कथं । আমি যখন এসেছি— তখন স্বপ্নের আমল আরব্য উপন্যাসের যুগ বাংলা দেশ থেকেই কেটে গেছে। বঙ্কিমচন্দ্রের যুগের তখন আরম্ভ। ‘গুলবকাওলী’ ‘ইন্দ্রসভা’, ‘হোমার’, এ-সব বইগুলো পর্যন্ত সরে পড়বার জোগাড় করেছে— এই সময় রামলাল চাকরের সঙ্গে বলে দেখি, দুই দেয়ালে দুই সেই সেকালের ছবির দিকে – বড়ে বড়ো চোখ নিয়ে ছবির মানুষ দুটি চেয়ে আছে, মুখে দু’জনেরই কেমন একটা উদাস ভাব ছবির গায়ে আঁকা । হীরে-মুক্তোর জড়োয় সাজসজ্জা যেন কত কালের কত দূরের বাতির আলোতে একটু একটু ঝিকঝিক করছে। আমি অবাক হয়ে এখনো এই ছবি দেখি আর ভাবি কী স্বন্দর দেখতেই ছিল তখনকার ছেলেরা মেয়ের ; কী চমৎকার কত গহনায় সাজতে ভালোবাসত তা কল্পমা নিয়ে থাকার সুবিধে ছিল না তখন, কেননা রামলাল এসে গেছে এবং আমাকে পিটিয়ে গড়বার ভার নিয়ে বসেছে । বুঝিয়ে-স্থঝিয়ে মেরে-ধরে, এ-বাড়ির আদবকায়দা-দোরস্ত একজন কেউ করে তুলবেই আমাকে, এই ছিল রামলালের পণ ছোটোকর্তী ছিলেন রামলালের সামনে মস্ত আদর্শ, কাজেই এ-কালের মতে না করে, অনেকটা সেকেলে ছাচে ফেললে লে আমাকে— দ্বিতীয় এক ছোটোকর্তা করে তোলার মতলবে । ছোটোকর্তা ছুরি-কাটাতে খেতেন, কাজেই আমাকেও রামলাল মাছের কাটাতে ভাতের মণ্ড গেথে খাইয়ে সাহেবী দস্তরে পাকা করতে চলল ; জাহাজে করে বিলেত যাওয়া দরকার হতেও পারে, সেজন্য সাধ্যমতো রামলাল ইংরিজির তালিম দিতে লাগল— ইয়েস নো বেরি-ওয়েল, টেক্ ন৷ টেক্ ইত্যাদি নানা মজার কথা । কোথা থেকে নিজেই সে একখানা বঁাশ ছুলে কাগজে কাপড়ে মস্ত একটা জাহাজ বানিয়ে দিলে আমাকে— সেটা হাওয়া পেলে পাল ভরে আপনি দৌড়োয় মাটির উপর দিয়ে। এই জাহাজ দিয়ে, আর হাসের ডিমের কালিয়৷ দিয়ে ভুলিয়ে, খানিক বিলিতি শিক্ষা, সওদাগরি-ব্যাবসা, কারিগরি, রান্না, জাহাজ-গড়া, নৌকার ছই-বাধা ইত্যাদি অনেক বিষয়ে পাক করে তুলতে থাকল আমাকে রামলালু। Vo סוצחסי
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।