আমাকে লোকেরা চেনে না—তারা আমাকে নানা দিক থেকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেখেছে । তখন বেঁচে ছিলুম—আর এখন আধমরা হয়ে ঘাটে এসে পৌঁচেছি।’ কখনো-বা তার মা’র গল্প পড়তে পড়তে বলতেন, ‘মাকে আমরা জানি নি, তাকে পাই নি কখনো । তিনি থাকতেন তার ঘরে তক্তাপোশে বসে, খুড়ির সঙ্গে তাস খেলতেন। আমরা যদি দৈবাৎ গিয়ে পড়তুম সেখানে, চাকররা তাড়াতাড়ি আমাদের সরিয়ে আনত—যেন আমরা একটা উৎপাত। মা যে কী জিনিস তা জানলুম কই আর । তাই তো । তিনি আমার সাহিত্যে স্থান পেলেন না। আমার বড়দিদিই আমাকে মানুষ করেছেন। তিনি আমাকে খুব ভালোবাসতেন। মার ঝোক ছিল জ্যোতিদা আর বড়দার উপরেই। আমি তো তার কালো ছেলে । বড়দির কাছে কিন্তু সেই কালো ছেলেই ছিল সবচেয়ে ভালো। তিনি বলতেন, যা’ই বলে, রবির মতো কেউ না। বড়দিদির হাত থেকে আমাকে হাতে নিলেন নতুন-বউঠান।’ এই বলতে বলতে গুরুদেবের চোখ সজল হয়ে আসত। সেবারে যখন জোড়াসাকোর বাড়িতে ছিলুম, আর দু-বেলা গল্প শুনতুম, তখন রোজই অৱনীন্দ্রনাথ ভোর ছটায় এ বাড়িতে চলে আসতেন। দশটা সাড়ে-দশটা অবধি নানারকম গল্পগুজব হত। একদিন সকালে ওঁর আসতে দেরি হচ্ছে দেখে ভাবলুম বুঝি-বা শরীর খারাপ হয়েছে। ওবাড়িতে গিয়ে দেখি তিনি বাগানের এক কোণে কী যেন খুজে বেড়াচ্ছেন। আমাকে দেখে বললেন, ‘না, ও আর পাওয়া যাবে না, একেবারে গর্তে পালিয়েছে। আমার একটু অবাক লাগল ; বললুম, কী খুজছেন আপনি ? তিনি বললেন, ‘একটা, ইদুর, জ্যাস্ত হয়ে আমার হাত থেকে লাফিয়ে কোথায় যে পালালে। ! ও ঠিক গর্তে ঢুকে বসে আছে। কাল বিকেলে একটা ইদুর করলুম, কাঠের, এই এতটুকু, বেড়ে ইছরটি হয়েছিল, কেবল লেজটুকু জুড়ে দেওয়া বাকি। ভাবলুম এটা,শেষ করেই আজ উঠব। সন্ধে হয়ে এসেছে, ভালো দেখতে পাচ্ছিলুম না—চৌকিট। বারান্দার রেলিঙের পাশে টেনে নিয়ে ওই যেটুকু আলো পাচ্ছি তাইতেই কোনোরকমে তারের একটি লেজ ষেই না ইদুরের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে একটু 8 a సె
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪২৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।