আসে যেন গোলমাল ন হয়, কর্তা শুনতে পাবেন। চাকরগুলো কড়ী নজর রাখে— খালি পা, কি ময়লা কাপড়ে আছি কিনা। পাঠান কুস্তিগীর ক'জন খুব কষে মাটি মেখে নিয়মিত কসলত করতে লেগে যায় ! বুড়ে খানসাম গোবিন্দ, সেও ভোরে ভোরে উঠে কর্তাব জন্য দুধ আনতে গোয়ালঘরে গিয়ে টোকে । - এই গোবিন্দ ছিল কর্তার চাকর । এর একটা মজার কাহিনী মনে পড়ছে, ভোরে উঠে গোবিন্দ কর্তার জন্য দুধ নিয়ে ফিরছে, ঠিক সেই সময় পথ আগলে পাঠান সর্দার দুটে কুস্তি লাগিয়েছে। গোবিন্দ যত বলে পথ ছাড়তে, পাঠান তারা কানই দেয় না। পাঠান নড়ে না দেখে, গোবিন্দ একটু চটে উঠে অথচ গলার স্বর খুব নরম করে বলে— ‘পাঠান ভাই, রাস্ত ছাড়ে!! শুনতা, ও পাঠান ভাই ! দেখ, পাঠান ভাই, কঁাদের ওপোর ছাগল নাপাত হ্যায়, হাতে দুধের ঘট্রে হ্যায়, দুধটা পড়ে যাবে তো জবাবদিহি করবে কে ? কর্তা বাড়ি এলে বাড়ি দুটো ঢিলেঢাল। ঝিমন্ত ভাব ছেড়ে বেশ যেন সজাগ হয়ে উঠত। আবার একদিন দেখতেম কর্তা কখন চলে গেছেন, বাড়ির সেই আগেকার ভাবটা ফিরে এসেছে। দরোয়ান হাকাহঁকি শুরু করেছে, আমাদের ছরে মেথরে আর বুড়ে জমাদারে বিষম তকরার বেধেছে। জমাদার লাঠি নিয়ে যত ঝে কেওঠ, ছীরে মেথর ততই নরম হয়। জমাদারের দু’প জড়িয়ে ধরবে এমনি ভাবটা দেখায়। তখন জমাদারজা রণে ভঙ্গ দিয়ে তফাতে সরেন, ছরেও বুক ফুলিয়ে বাসায় গিয়ে ঢুকে তার বউটাকে প্রহার আরম্ভ করে। আরো চেঁচামেচি বেধে যায়। ওদিকে দাসীতে দাসীতে ঝগড়া – তাও শুরু হয় অন্দরে। বৈঠকখানাতে গানের মজলিস জাকিয়ে অক্ষয়বাবু গলা ছাড়েন । আমাদেরও হুটোপাট আরম্ভ হয়ে যায় ! কর্তা না থাকলে বাধা চলচোল এমনি আলগা হয়ে পড়ে যে, মনে হয়, ঘড়িতে হাতুড়ি পিটিয়ে চললেও দরোয়fন কিছু বলবে না ! কর্তfর গাড়ি ফটক পেরিয়ে যাওয়া মাত্র ইস্কুল থেকে ছুটি-পাওয়৷ গোছের হয়ে পড়ত বাড়ির এবং বাড়ির সকলের ভাবটী । শীতকালে ষে বারে কর্তfদাকামণায় বাড়ি থাকতেন সেবারে মাঘোৎসব খুব জকিয়ে হত । একটা উৎসবের কথা মনে আছে একটু— সেবারে সংগীতের আয়োজন বিশেষভাবে করা হয়েছিল। হায়দারাবাদ থেকে মৌলাবক্স সেবারে জলতরঙ্গ বাজনা এবং গান করতে আমন্ত্রিত হন। vడి:9
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।