লেখে ইতিহাস। শখের আবার ঠিক রাস্ত বা স্কুল রাস্ত কী। এর কি জার নিয়মকায়ুন আছে। এ হচ্ছে ভিতরকার জিনিস, আপনিই লে বেরিয়ে আসে, পথ করে নেয়। তার জন্ত ভাবতে হয় না। যার ভিতরে শখ নেই, তাকে এ কথা বুঝিয়ে বলা যায় না। ছবিও তাই— টেকনিক, স্টাইল, ও সব কিছু নয়, আসল হচ্ছে এই ভিতরের শখ। আমার বাজনার বেলায়ও হয়েছিল তাই । শোনে। তবে, তোমায় বলি গল্পটা গোড়া থেকে । ইচ্ছে হল পাক বাজিয়ে হব, যাকে বলে ওস্তাদ । এসরাজ বাজাতে শুরু করলুম ওস্তাদ কানাইলাল ঢেরীর কাছে, আমি, হরেন ও অরুদা। শিমলের ওদিকে বাসাবাড়ি নিয়ে ছিল, আমরা রোজ যেতুম সেখানে বাজনা শিখতে । স্বরেনের বিলিতি মিউজিক পিয়ানো সব জানা ছিল, ভালো করে শিখেছিল, সে তো তিন টপকায় মেরে দিলে। অরুদাও কিছুকালের মধ্যে কায়দাগুলো কস্ত করে নিলেন । আমার আর, যাকে বলে এসরাজের টিপ, সেটপ আর দোরস্ত হয় না। আঙুলে কড়া পড়ে গেল, তার টেনে ধরে ধরে । বারে বারে চেষ্টা করছি টিপ দিতে, তার টেনে ধরে কান পেতে আছি কতক্ষণে ঠিক ফে-স্বরটি দরকার সেইটি বেরিয়ে আসবে, হঠাৎ এক সময়ে অ্যা—ও করে শব বেরিয়ে এল। ওস্তাদ হেসে বলত, ই, এইবারে হল । * আবার ঠিক না হলে মাঝে মাঝে ছড়ের বাড়ি পড়ত আমার আঙলে। প্রথম প্রথম আমি তো চমকে উঠতুম, এ কী রে বাবা। এমনি করে আমার এসরাজ শেখা চলছে, রীতিমতে হাতে নাড়া বেঁধে । ওস্তাদও পুরোদমে গুরুগিরি ফলাচ্ছে আমার উপরে। দেখতে দেখতে বেশ হাত খুলে গেল, বেশ স্বর ধরতে পারি এখন, যা বলে ওস্তাদ তাই বাজাতে পারি, টিপও এখন ঠিকই হয়। ওস্তাদ তো ভারি খুশি আমার উপর । তার উপর বড়োলোকের ছেলে, মাঝে মাঝে পেল্লামি দেই, একটু ভক্তিটক্তি দেখাই— এমন শাগরেদের উপর নজর তো একটু থাকবেই। এই পেন্নামি দেবার দস্তুরমতে ; একটা উৎসবের দিনও ছিল। শ্রীপঞ্চমীর দিন একটা বড়ে রকমের জলসা হত ওস্তাদের বাড়িতে। তাতে তার ছাত্ররা সবাই জড়ো হত, বাইরের অনেক ওস্তাদ শিল্পীরাও আসতেন। সেদিন ছাত্রদের ওস্তাদকে পেয়ামি দিয়ে পেয়াম করতে হত। আমিও যাবার সময় পকেটে টাকাকড়ি নিয়ে যেতুম। অরুদ স্বরেন ওরা এ-সব মানত না । ఆR
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৭৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।