লাগাও । ধুমধামে ড্রামাটিক ক্লাবের শ্রাদ্ধ স্বসম্পন্ন করা গেল— এ হচ্ছে ‘খামখেয়ালি’র অনেক আগে । ড্রামাটিক ক্লাবের শ্রাদ্ধে রীতিমত ভোজের ব্যবস্থা হল, হোটেলের খান । ‘বিনি পয়সার ভোজ এর মধ্যে আমাদের সেইদিনটার মনের ভাব কিছু ধরা পড়েছে। এই শ্রাদ্ধবাসরে দ্বিজুবাবু নতুন গান রচনা করে আনলেন ‘আমরা তিনটি ইয়ার এবং নতুন কিছু করে । দ্বিজুবাবু আমাদের দলে সেই দিন থেকে ভরতি হলেন । এই শ্রাদ্ধের ভোজে ‘নিয়া -পোলিটান ক্রম এমন উপাদেয় লেগেছিল যে আজও তা ভুলতে পারি নি —ঘটনাগুলো কিন্তু প্রায় মুছে গেছে মন থেকে । ওই বিনি পয়সার ভোজের মতোই কাচের বাসনগুলো হয়ে গিয়েছিল চকচকে আয়না, মাটনচপের হাড়গুলো হয়েছিল হাতির দাতের চুষিকাঠি, এ আমি ঠিকই বলছি। এই সভাতেই খামখেয়ালি সভার প্রস্তাব করেন রবিকাক । সভার সভ্য যাকে-তাকে নেওয়া নিয়ম ছিল না, কিংবা সভাপতি প্রভৃতির ভেজাল ছিল না । ভালো কতক পাক্কা খামখেয়ালি তারাই হল মজলিশী সভ্য, বাকি সবাই আসতেন নিমন্ত্রিত হিসেবে। প্রত্যেক মজলিশী সভ্যের বাড়িতে একটা করে মাসে মাসে অধিবেশন হত। নতুন লেখা, অভিনয়, কত কী হত তার ঠিক নেই, সঠিক বিবরণও নেই কোথাও । কেবল চোত কাগজে ঘটনাবলীর একটু একটু ইতিহাস টোক আছে । বাজনার চর্চা আমি অনেকদিন অবধি রেখেছিলুম । এক সময়ে দেখি ভেঙে গেল । স্পষ্ট মনে পড়ছে না কেন । হ্যামসুন্দর চলে গেল, রাধিক গোসাই সমাজে কাজ নিলে, আর আসে না কেউ, দিতু তখন গানবাজনা করে, কলকাতায় প্লেগ, মহামারী, তার পরে এল স্বদেশী হুজুগ । ঠিক কিসে যে আমার বাজনাটা বন্ধ হল তা মনে পড়ছে না । তখন এক সময়ে হঠাৎ দেখি সবাই স্বদেশী হুজুগে মেতে উঠেছে । এই স্বদেশী হুজুগটা যে কোথা থেকে এল কেউ আমরা তা বলতে পারি নে । এল এইমাত্র জানি, আর তাতে ছেলে বুড়ে মেয়ে, বড়োলোক মুটে মজুর, সবাই মেতে উঠেছিল । সবার ভিতরেই যেন একটা তাগিদ এসেছিল । কিন্তু কে দিল এই তাগিদ । সবাই বলে, হুকুম আয় । আরে, এই হুকুমই বা দিলে কে, কেন । তা জানে না কেউ, জানে কেবল – হুকুম আয় । তাই মনে হয় এটা সবার ভিতর থেকে এসেছিল – রবিকাকাকে জিজ্ঞেস করে טאטא,
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৭৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।