পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করেছে। এমন-কি, বিলেতফেরতার ক্রমে ক্রমে ধুতি পরতে শুরু করলে। আমাদের কালে বিলেতফেরতাদের নিয়ম ছিল ধুতি বর্জন করা। আমাদের তো আর-কিছু ছিল না, ছিল কেবল মোজা, তাও সেই যে মোজা বর্জন করলুম আর ধরি নি কখনো । দেখো দিকিনি, এখনো বোধ হয় রবিকাকা মোজা পরেন না । ন্যাশনাল ড্রেস নাম হল কংগ্রেস থেকে। রবিকাকাই বললেন, কংগ্রেসকে ন্যাশনালাইজ করতে হবে । কলকাতায় সেবার কংগ্রেস হয়, দেশ-বিদেশের নেতারা এসেছিলেন অনেকেই । কর্তাদের শখ হল, এইখানেই সেই অতিথি-অভ্যাগতদের একটা পার্টি দিতে হবে। ঠিক হল সবাই ন্যাশনাল ড্রেসে আসবে। আমি বলি, সে কী করে হবে । রবিকাকা বললেন, না, তা হতেই হবে । তিনি নিমন্ত্রণপত্রে ছাপিয়ে দেওয়ালেন : all must come in national dress I STE AFF frNN Zz-75 °CF c° ইঙ্গবঙ্গসমাজের চাইদের মধ্যে। তখনকার সেই স্বদেশী যুগে ঘরে ঘরে চরকা কাটা, তাত বোন, বাড়ির গিরি থেকে চাকরবাকর দাসদাসী কেউ বাদ ছিল না। মা দেখি একদিন ঘড়ঘড় করে চরকা কাটতে বসে গেছেন। মার চরকা কাটা দেখে হাভেল সাহেব তার দেশ থেকে মাকে একটা চরকা আনিয়ে দিলেন। বাড়িতে তাত বসে গেল, খটখট শব্দে তাত চলতে লাগল। মনে পড়ে এই বাগানেই স্বতে রোদে দেওয়া হত। ছোটো ছোটো গামছা ধুতি তৈরি করে মা আমাদের দিলেন – সেই ছোটো ধুতি, হাটুর উপর উঠে যাচ্ছে, তাই পরে আমাদের উৎসাহ কত । একদিন রাজেন মল্লিকের বাড়ি থেকে ফিরছি, পল্লীসমিতির মিটিঙের পর, রাস্তার মোড়ে একটা মুটে মাথা থেকে মোট নামিয়ে সেগাম করে হাতে পয়সা কিছু গুজে দিলে, বললে, আজকের রোজগার। একদিনের সব রোজগার স্বদেশের কাজে দিয়ে দিলে। মুটেমজুরদের মধ্যেও কেমন একটা ভাব এসেছিল স্বদেশের জন্য কিছু করবার, কিছু দেবার। রবিকাকা একদিন বললেন, রাখীবন্ধন-উৎসব করতে হবে আমাদের, সবার হাতে রাখী পরাতে হবে। উৎসবের মন্ত্র অনুষ্ঠান সব জোগাড় করতে হবে, তখন তো তোমাদের মতো আমাদের আর বিধুশেখর শাস্ত্রীমশায় ছিলেন না, ক্ষিতিমোহনবাবুও ছিলেন না কিছু-একটা হলেই মন্ত্র বাৎলে দেবার। কী করি, e