পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রীষ্মের কবিতা দাদামশায়ের ফরমাশেই লেখা । বেজায় গরম, বেলগাছিয়া বাগানবাড়িভে তখন, ডাবের জল, বরফ, এটা ওটা-খাওয়া হচ্ছে— দাদামশাই বললেন, লেখে হে ঈশ্বর, একটা গ্রীষ্মের কবিতা । তিনি লিখলেন— দে জল দে জল বাবা দে জল দে জল, জল দে জল দে বাবা জলদেরে বল । দাদামশায়ের আর-একটা শখ ছিল বড় উঠলেই বলতেন ঝড়ের মুখে পাল তুলে দিতে। সঙ্গীরা তো ভয়ে অস্থির— অমন কাজ করবেন না। না, পাল তুলতেই হবে, হুকুম হয়েছে। সেই ঝড়ের মুখে পাল তুলে দিয়ে পিনিস ছেড়ে দিতেন, ডোবে কি উণ্টোয় সে ভাবনা নেই। পিনিস উড়ে চলেছে -হুস্থ করে, আর তিনি জানালার ধারে বসে ছবি আঁকছেন । একেই বলে শখ। দাদামশায়ের যাত্রা করবার শখ, গান বধিবার শখ – নানা শখ নিয়ে তিনি থাকতেন। ব্যাটারি চালাতেন, কেমিষ্ট্রর শখ ছিল । আর শৌখিনতার মধ্যে ছিল দুটে ‘পিয়ারগ্লাস’ তার বৈঠকখানার জন্য। বিলেতে নবীন মুখুজ্জেকে লিখলেন— বাবাকে বলে এই দুটো যে করে হোক জোগাড় করে পাঠাও। তিনি লিখলেন, এখানে বড়ে খরচ, গভর্ণর বড়ে ক্লোজ-ফিস্টেড হয়েছেন। তবে দরবার করেছি। হুকুমও হয়ে গেছে, কার-টেগোর কোম্পানির জাহাজ যাচ্ছে, তাতে তোমার ছটে ‘পিয়ারগুfস’ আর ইলেকট্রিক ব্যাটারি খালাস করে নিয়ে। কানাইলাল ঠাকুরের শখ ছিল পোশাকি মাছে। ছেলেবেলা থেকে শখ পোশাকি মাছ খেতে হবে । বামুনকে প্রায়ই হুকুম করতেন পোশাকি মাছ চাই আজ। সে পুরোনো বামুন, জানত পোশাকি মাছের ব্যাপার, অনেকবারই তাকে পোশাকি মাছ রান্না করে দিতে হয়েছে। বড়ো বড়ে লালকোর্তাপর চিংড়িমাছ সাজিয়ে সামনে ধরল, দেখে ভারি খুশি, পোশাকি মাছ এল । জগমোহন গাঙ্গুলি মশায়ের ছিল রান্নার আর থাবার শখ। হরেক রকমের রান্না তিনি জানতেন । পাকা রণধিয়ে ছিলেন, কি বিলিতি কি দেশী । গায়ে যেমন ছিল অগাধ শক্তি, খাইয়েও তেমনি। ভালো রান্না আর ভালো খাওয়া নিয়েই থাকতেন তিনি সকাল থেকে সন্ধে ইস্তিক । অনেকগুলো বাটি ছিল তার, সকাল হলেই তিনি এ বাড়ি ও বাড়ি-ঘরে ঘরে একটা করে বাটি ԳԵ