এমনি গলার স্বর হয়ে গেছে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে । ঈশ্বরবাবুর আহলাদ আর ধরে না, কর্তাদাদামশায়ের আলিঙ্গন পেয়ে । তার পর কর্তাদাদামশায় মাপিসিমাদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করে তো চলে গেলেন । এতক্ষণে ঈশ্বরবাবুর বুলি ফুটল ; বললেন, দেখলে, বলেছিলেন উনি চিনবেন না আমাকে— দেখলে তো ? ঠিক মনে আছে পায়রা-কেনার গল্প । তোমাদের তো আলাপ করিয়ে দিতে হল, আর আমাকে— আমাকে তো উনি দেখেই চিনে ফেললেন । কর্তাদাদামশায়ের এক সময়ে গান বাজনার শখ ছিল, জানো ? শুনবে সে গল্প ? বলব ? আচ্ছা, বলি । তখন পরগনা থেকে টাকা অসিত কলসীতে করে । কলসীতে করে টাকা এলে পর সে টাকা সব তোড়া বাধা হত । টাকা গোনার শব্দ আর এখন শুনতে পাই না, ঝন ঝন রুপোর টাকার শব্দ । এখন সব নোট হয়ে গেছে । কর্তার ‘পার্সেনাল খরচ, সংসার খরচ, অমুক । খরচ, ও-বাড়ির এ-বাড়ির খরচ যেখানে যা দরকার ঘরে ঘরে ওই এক-একটি তোড়া পৌছিয়ে দেওয়া হত, তাই থেকে খরচ হতে থাকত । এখন এই-যে আমার নীচের তলায় সিড়ির কাছে যেখানে ঘড়িটা আছে, সেখানে মন্ত পাথরের টেবিলে সেই টাকা ভাগ ভাগ করে তোড়া বাধা হত । এ-বাড়ি ছিল তখন বৈঠকখান । এ-বাড়িতে থাকতেন দ্বারকানাথ ঠকুর, জমিদারির কাজকর্ম তিনি নিজে দেখতেন । কর্তাদাদামশায় তখন বাড়ির বড়ে ছেলে । - মহ শৌখিন তিনি তখন, বাড়ির বড়ে ছেলে । ও-বাড়ি থেকে রোজ সকালে একবার করে দ্বারকানাথ ঠাকুরকে পেল্লাম করতে আসতেন— তখনকার দস্তুরই ছিল ওই ; সকালবেল একবার এসে বাপকে পেন্নাম করে যাওয়া । ছোকরাবয়স, দিব্যি মুন্দর ফুটফুটে চেহারা, সে-সময়ের একটা ছবি আছে রথীর কাছে দেখে। বেশ সলমা-চুমকি-দেওয়া কিংখাবের পোশাক পরা তখন কর্তাদাদামশায় ষোল বছরের— সেই বয়সের চেহারার সেই ছবিটা পরে মাঝে মাঝে দেখতে পছন্দ করতেন, প্রায়ই জিজ্ঞেস করতেন আমাকে, ছবিটা যত্ন করে রেখেছ তেী — দেখো, নষ্ট কোরো না যেন । যে কথা বলছিলুম । তা, কর্তাদাদামশায় তো যাচ্ছেন বৈঠকখানায় বাপকে পেন্নাম করতে । যেখানে তোড়া বাধা হচ্ছে সেখান দিয়েই যেতে হত। সঙ্গে ছিল হরকরা– তখনকার দিনে হরকরা সঙ্গে সঙ্গে থাকত জরির তকমাপরা, হরকরার সাজের বাহার কত । এই যে এখন আমি এখানে এসেছি, তখনকার Ե ֆ NA AIR,
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।