ঈশ্বরবাবু বলতেন, তার পর জানো ভাই, আমি তো দাড়ি গজাতে শুরু করলুম, মাঝখানে সিখি কেটে দাড়ি ভাগ করে গালের দু দিক দিয়ে কানের পাশ অবধি তুলে দিই। সেই আমার দেখাদেখি কর্তামশায় দাড়ি রাখলেন। কর্তামশায়ের যেই-না দাড়ি রাখা, কী বলব ভাই, দেখতে দেখতে সবাই দাড়ি রাখতে শুরু করলে, আর কর্তামশায়ের মতো সোনার চশমা ধরল। সেই থেকে দাড়ি আর সোনার চশমার একটা চাল শুরু হয়ে গেল । শেষে ছোকরার পর্যন্ত দাড়ি আর চশমা ধরলে । এবার বুঝলে তো ভাই কোথেকে এই দাড়ির উৎপত্তি ? এই বলে ঈশ্বরবাবু খুব গর্বের সঙ্গে বুকে হাত দিয়ে নিজেকে দেখাতেন । কর্তাদাদামশায়ের সব-প্রথম চেহারা আমার মনে পড়ে আমার অতি বাল্য কালে দেখা । দু বাড়ির মাঝখানে যে লোহার ফটকটি, সকালবেলা একলাএকল সেই ফটকটির লোহার গরাদে গা ঢুকিয়ে একবার ঠেলে এ দিকে আনছি, একবার ঠেলে ওই দিকে নিচ্ছি, এইভাবে গাড়ি গাড়ি, খেলা করছিলুম। সেই সময়ে কর্তাদাদামশায় এলেন, একখানি ফাষ্ট ক্লাস ঠিকেগাড়িতে ! উনি যখন আসতেন কাউকে খবর দিতেন না, ওই রকম হঠাৎ এসে পড়তেন । সকালবেলা বাড়ির সবাই তখনে ঘুমোচ্ছে । এর আগে আমরা তাকে কখনো দেখি নি। গাড়ির উপরে কিশোরী বসে, কিশোরী পাচালি পড়তেন, নেমে দরজা খুলে দিলে কর্তাদাদামশায় গাড়ি থেকে নামলেন । লম্বা পুরুষ, শাদা বেশ । বাড়িতে সাড়া পড়ে গেল, সবাই তটস্থ, আমার গাড়ি-গাড়ি খেলা বন্ধ হয়ে গেল— ফটকের পাশে দাড়িয়ে তাকে দেখতে লাগলুম, দারোয়ানদের সঙ্গে । বাড়ির সরকার কর্মচারী সবাই এসে র্তাকে পেল্লাম করছে, আমার কৗ খেয়াল হল, আমিও সেই ধুলোকাদামাখ জামা-কাপড়েই ছুটে গিয়ে পায়ে এক পেন্নাম । কর্তাদাদামশায় আমার মাথায় দু-তিনবার হাত চাপড় দিয়ে আশীর্বাদ করলেন। তার পরে আমি তো এক দৌড়ে একেবারে মার কাছে চলে এলুম। মা শুনে তো আমাকে বকতে লাগলেন – অ্য, তুই কোন সাহসে গেল, এই রকম বেশে ধুলোকা মেখে । চাকরও দাবড়ানি দেয়, ভাবলুম কী একটা অষ্ঠায় করে ফেলেছি। এই তার প্রথম মুতি আমার মানসপটে। আর-একবার আরো কাছ থেকে তাকে দেখেছি, দিল্লুর অন্নপ্রাশন কি পৃইতে উপলক্ষে। লাল b>&
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৯৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।