স্থানের রস দ্বারা তাহার জীবন সংগঠিত হইতেছে। সেই ভূমিই তাহার স্বদেশ ও তাহার পরিপোষক।
বৃক্ষের ভিতরেও আর একটি শক্তি নিহিত আছে যাহা দ্বারা যুগে যুগে সে আপনাকে বিনাশ হইতে রক্ষা করিয়াছে। বাহিরে কত পরিবর্ত্তন ঘটিয়াছে, কিন্তু অদৃষ্টবৈগুণ্যে সে পরাহত হয় নাই। বাহিরের আঘাতের উত্তরে পূর্ণজীবন দ্বারা সে বাহিরের পরিবর্ত্তনের সহিত যুঝিয়াছে। যে পরিবর্ত্তন আবশ্যক, সে তাহা গ্রহণ করিয়াছে; যাহা অনাবশ্যক, জীর্ণপত্রের ন্যায় সে তাহা ত্যাগ করিয়াছে। এইরূপে বাহিরের বিভীষিকা সে উত্তীর্ণ হইয়াছে।
আরও একটি শক্তি তাহার চিরসম্বল রহিয়াছে। সে যে বটবৃক্ষের বীজ হইতে জন্মগ্রহণ করিয়াছে, এই স্মৃতির ছাপ তাহার প্রতি অঙ্গে রহিয়াছে। এই জন্য তাহার মূল ভূমিতে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত, তাহার শির ঊর্দ্ধে আলোকের সন্ধানে উন্নত এবং শাখা-প্রশাখা ছায়াদানে চতুর্দ্দিকে প্রসারিত। তবে কি কি শক্তিবলে সে আহত হইয়াও বাঁচিয়া থাকে? ধৈর্য্য ও দৃঢ়তায় সে তাহার স্বস্থান দৃঢ়রূপে আলিঙ্গন করিয়া থাকে, অনুভূতিতে সে ভিতর ও বাহিরের সামঞ্জস্য করিয়া লয়, স্মৃতিতে বহু জীবনের সঞ্চিত শক্তি নিজস্ব করিয়া লয়। আর যে হতভাগ্য আপনাকে স্বস্থান ও স্বদেশ হইতে বিচ্যুত করে, যে পর-অন্নে পালিত হয়,