রহিয়াছে; প্রতি কণা ইহা দ্বারা অনুপ্রবিষ্ট। এ মুহূর্ত্তে যাহা দেখিতেছি, পরমুহূর্ত্তে ঠিক তাহা আর দেখিব না। বেগবান নদীস্রোত যেরূপ উপলখণ্ডকে বার বার ভাঙ্গিয়া অনবরত তাহাকে নূতন আকার প্রদান করে, এই মহাশক্তি-স্রোতও সেইরূপ দৃশ্য জগৎকে মুহূর্ত্তে মুহূর্ত্তে ভাঙ্গিতেছে ও গড়িতেছে। সৃষ্টির আরম্ভ হইতে এই স্রোত অপ্রতিহত গতিতে প্রবাহিত হইতেছে। ইহার বিরাম নাই, হ্রাস নাই, বৃদ্ধি নাই। সমুদ্রের এক স্থানে ভাঁটা হইলে অন্য স্থানে জোয়ার হয়। জোয়ার ভাঁটা উভয়ই এক কারণজাত; সমুদ্রের জলপরিমাণ সমানই রহিয়াছে। এক স্থানে যত হ্রাস হয়, অপর স্থানে সেই পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এইরূপ জোয়ার ভাঁটা–ক্ষয় বৃদ্ধি–তরঙ্গের ন্যায় চতুর্দ্দিকে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে।
শক্তির তরঙ্গেও এইরূপ–ক্ষয় বৃদ্ধি! প্রত্যেক বস্তু এই তরঙ্গ দ্বারা সর্ব্বদা আহত হইতেছে, উপলখণ্ড ভাঙ্গিতেছে ও গড়িতেছে। শক্তিপ্রক্ষিপ্ত ঊর্ম্মিমালার দ্বারাই জগৎ জীবন্ত রহিয়াছে।
এখন জড়-জগৎ ছাড়িয়া জীব-জগতে দৃষ্টিপাত করি। বসন্তের স্পর্শে নিদ্রিত পৃথিবী জাগরিত করিয়া, প্রান্তর বন আচ্ছন্ন করিয়া উদ্ভিদ্-শিশু অন্ধকার হইতে মস্তক তুলিল। দেখিতে দেখিতে হরিৎ প্রান্তর প্রসূনিত। শরৎকাল আসিল,