এই দুর্ম্মতির ফল ফলিতে অধিক বিলম্ব হইল না। সব দিকের পথ একেবারে বন্ধ হইয়া গেল এবং সমস্ত আলো যেন অকস্মাৎ নিবিয়া গেল। কিন্তু ইহার পর হইতেই অন্তরের ক্ষীণ আলো অধিকতর পরিস্ফুট হইতে লাগিল। প্রখর আলোকে যাহা দেখিতে পাই নাই, এখন তাহা দেখিতে পাইলাম। আশা ও নিরাশার অতীত এই ভাবে বিশ বৎসর কাটিল।
এক বৎসর পূর্ব্বে হঠাৎ যেন নির্দ্দেশ শুনিতে পাইলাম, “বিদেশ যাও”। বিদেশ যাত্রা! সেখানে কে আমার কথা শুনিবে? এবার কঠিন স্বর শুনিলাম- “আমার নাম হুকুম, তোমার নাম তামিল! লাভালাভ বলিবার তুমি কে?” আজ্ঞা শিরোধার্য্য করিয়া লইলাম।
তারপর সমস্ত দিকের রুদ্ধ দ্বার একেবারে খুলিয়া গেল। কাহার হুকুমে এরূপ হইল? একি স্বপ্ন? বিরোধী যাঁহারা ছিলেন, এখন তাঁহারাই পরম মিত্র হইলেন। যাহা প্রত্যাখ্যাত হইয়াছিল, এখন তাহা সর্ব্বত্র গৃহীত হইল। বিশ বৎসর আগে যাহা কুমতি মনে করিয়াছিলাম, পুনরায় দেখিতে পাইলাম- তাহাই সুমতি।
সুতরাং কোন্টা সুমতি আর কোন্টা কুমতি জানি না। কোন্টা বড় আর কোন্টা ছোটো তাহাও মন বোঝে না। সুদিনের বৃহৎ সফলতা ভুলিয়া দুর্দ্দিনের বিফলতার কথাই মনে পড়িতেছে।