সত্তরটি বীর-মুষ্টিপ্রমাণ কৃষ্ণ মেঘের ন্যায়-অগণিত শত্রুদলের উপর পতিত হইল এবং অসির আঘাতে পথ কাটিয়া মুহূর্ত্তে অদৃশ্য হইল।
পরদিন প্রত্যুষে ইংরেজ-সৈন্য যোদ্ধৃ-পরিত্যক্ত দুর্গে প্রবেশ করিল। প্রবেশ করিয়া যাহা দেখিল, তাহাতে তাহাদের উল্লাস বিষাদে পরিণত হইল। এই কি দুর্গ-না শ্মশান? এই শবকবন্ধ মণ্ডিত ভূমিতে কি প্রকারে মানুষ এতদিন বাস করিয়াছে? আহত, জীবিত ও মৃতের কি ভয়ানক সমাবেশ! এই যে সম্মুখে সুবাদারের মৃত শরীর পড়িয়া রহিয়াছে, ইহার ক্রোড়ে লুক্কায়িত চারি বৎসরের একটি শিশু কাঁদিতেছে। তাহার একটু অগ্রে একটি স্ত্রীলোক মৃতবৎ পড়িয়া রহিয়াছে, তাহার দুই ঊরু ভেদ করিয়া কামানের গোলা চলিয়া গিয়াছে। অদূরে বহু ছিন্ন হস্তপদ চতুর্দিকে বিক্ষিপ্ত দেখা যাইতেছে– এস্থানে শেল পড়িয়া বিদীর্ণ হইয়াছিল। নিকটে কয়েকটি শিশু রক্তাপ্লুত হইয়া ভূমিতে লুণ্ঠিত হইতেছে–এখনও তাহাদের প্রাণবায়ু বাহির হয় নাই। চতুর্দ্দিকে কেবল ‘জল জল’ এই কাতর ধ্বনি!
বলভদ্র সত্তরটি সঙ্গী লইয়া যেঁতগড়ের দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। ইংরেজ-সৈন্য এই দুর্গ অবরোধ করিয়াছিল; কিন্তু অধিকার করিতে পারে নাই। তারপর বলভদ্র সৈন্যের আধিপত্য গ্রহণ করেন এবং নেপাল-যুদ্ধ শেষ হইলে স্বদেশে তাঁহার