নবম পরিচ্ছেদ RRR ধীরপদে সীতাপতি নীহারের কক্ষের দিকে গোল রুক্মিণীবাবু আগে আগে গেলেন । নীহারের জ্ঞান হইয়াছিল , ক্ষীণকণ্ঠে বলিল “জল ।” রুক্মিণীবাবু তাহাকে বালিশের উপর ভর দিয়া হেলানদিয়া বসাইলেন। বসাইয়া জলের গ্লাস মুখে তুলিয়া ধরিলেন। খানিকটা জল পান করিয়া নীহায় একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিল । রুক্মিণী বাবু বলিলেন-“মা, একজন তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছে বিদ্যুতের মত নীহারের মনে জাগিয়া উঠিল “সীতাপতি ।” সে যে রোগশয্যায় গুইয়া এই আশাই করিতেছিল”। মরণের পূর্ব্বে এক বার সীতাপতিকে দেখিতে পাইবে এ লোভ সে সম্বরণ করিতে পারিতে ছিল না। সীতাপতিকে প্রত্যাখ্যান · করিয়া 'সে দক্ষিণেশ্বর চলিয়া গিয়াছিল, সীতাপতির কাতর প্রার্থনায় সে কর্ণপাত ও করে নাই এ কথা সে কিছুতেই ভুলিতে পারে নাই। কর্ত্তব্যের প্রশ্লষাণ চাপাইয়াও এ কথা দমন করিতে পাবুে নাই। সীতাপতিকে বিস্মৃতি-সলিলে নিমজ্জিত করিতে পারে নাই। রোগশয্যায় পড়িয়া সকল সংবাদ শুনিয়া তাহার মন কতকটা লঘু হইয়াছিল। গদাধরের মৃত্যুতে সে একটা বিষয়ে নিশ্চিন্ত হইয়াছিল। দুঃস্বপ্নের মত তাহার জীবনের একটা দিক কাটিয়া গিয়াছে। এখন সে কেবল চায় হিসাব নিকাশ করিতে, সকলের সঙ্গে শেষ দেখা করিয়া শাস্তিতে শেষ ঘুম ঘুমাইতে। তাই সকলের আগে সীতাপতির সহিত সাক্ষাতের জন্যই সে ব্যগ্র হুইয়া উঠিয়াছিল। নীহারের উৎসুক ব্যাকুল দৃষ্টি কক্ষদ্বার পথে পড়িতেই সে সীতাপতিকে দেখিতে পাইল। সীতাপতিও ধীরে ধীরে কক্ষে প্রবেশ করিল। রুক্মিণী বাৰু বাহির হইয়া গেলেন।
পাতা:অভিমানিনী.djvu/২৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।