পাতা:অমর প্রেম - মানিক ভট্টাচার্য.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*

অমর প্রেম মনােহর সুহাসিনীর কথায় ব্যথা বুঝিয়া ধীরে ধীরে সান্ত্বনার সুরে বলিলেন, শুধু তােমার জন্য এ ব্যবস্থা একথা কেন ভাবছ। ভবিষ্যতের কথা কেউ বলতে পারে না। ধর, এমনই যদি হয় তুমি আমি দুজনকেই যেতে হল, তখন? তখন কে ছেলেমেয়েদের দেখবে? তারা যে একেবারে অপার সমুদ্রে পড়বে। সুহাসিনী বলিলেন, অত ভাবলে কি চলে? ও সব ভগবানের ইচ্ছা। তার ইচ্ছার উপর কিছু কিছু ছেড়ে দিতে হয় বৈ কি। মনােহর বলিলেন, তা হয় জানি। কিন্তু ভগবান্ যে এই জন্যই মানুষকে শক্তি দিয়াছেন। শক্তির প্রয়ােগ না করলে যে তার কৃপা থেকে বঞ্চিত হতে হবে—এ কথাও ত ভুললে চলবে না। তােমার মনকে জিজ্ঞাসা কর, আমি যা বলচি সত্য কি না? যদি মন তােমার এ কথায় সাড়া দেয়, তা হলে মুখকে তর্ক করুতে শিখিও না। তবে এটাও তােমাকে জানিয়ে রাখছি যা সামান্য কিছু বাঁচাতে পারছি তা আমি নিজের কাছে রাখছি না—নিজের সঞ্চয়ের শক্তির উপর আমার বিশ্বাস নেই। ঈশ্বর আমার মনের মধ্যে যে টুকু জ্ঞান বুদ্ধি দিয়াছেন তারই বশে কাজ করছি ; তােমাকে অবিশ্বাস করছিনে-নিজেও অপব্যয় করছিনে। সে রাত্রে সুহাসিনীর অনেক দুঃখ কমিয়া গেল। আনন্দ ও সুখ যেন দুজনেরই মনের বাতায়ন দিয়া সারারাত্রি নিদ্রা ও জাগরণের মধ্যে উকি মারিতে লাগিল। যৌবনে যে আনন্দ না পাইলেও যৌবনান্তে ভুলক্রমে অনেকেই যাহা পাইয়াছেন বলিয়া মনে করে, বুঝি আজ এতদিন পরে দুইজনেই স্বপ্নে সেই অজ্ঞাত আনন্দের আস্বাদ পাইল।