পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অমৃত-দ্বীপ

প্রথম যুগে, যখন সবুজ গাছ আর গানের পাখীর জন্মই হয় নি।

 খোলা ‘প্রমেনেড ডেকে’র উপরে পায়চারি করতে করতে মাণিক বললে, “আমাদের সমুদ্র যাত্রা শেষ হ’তে আরো কত দেরি বিমলবাবু?”

 বিমল বললে, “আর বেশী দেরি নেই। চার ভাগ পথের তিন ভাগই আমরা পার হয়ে এসেছি। ম্যাপখানা আমার মুখস্থ হয়ে গেছে। আরো কিছু দূর এগুলেই বোনিন্ দ্বীপপুঞ্জের কাছে গিয়ে পড়ব। তাদের বাঁয়ে রেখে আমাদের অগ্রসর হ’তে হবে প্রায় পূর্বব-দক্ষিণ দিকে। তারপরই অমৃত-দ্বীপ।”

 মাণিক বললে, “দ্বীপটি নিশ্চয়ই বড় নয়। কারণ তাহ’লে নাবিকদের ‘চার্টে’ তার উল্লেখ থাকত। এখানকার সমুদ্রে এমন অজানা ছোট ছোট দ্বীপ দেখছি তো অসংখ্য। অমৃত-দ্বীপকে আপনি চিনবেন কেমন ক’রে?”

 —“ম্যাপে অমৃত-দ্বীপের ছোট্ট একটা নক্সা আছে, আপনি কি ভালো ক’রে দেখেন নি? সে দ্বীপের প্রথম বিশেষত্ব হচ্ছে, তার চারিপাশই পাহাড় দিয়ে ঘেরা— পাহাড় কোথাও কোথাও দেড়-দুই হাজার ফুট উঁচু। তার দ্বিতীয় বিশেষত্ব, দ্বীপের ঠিক উত্তর-পশ্চিম কোণে পাহাড়ের উপরে আছে ঠিক পাশাপাশি পাঁচটি শিখর। সবচেয়ে উঁচু শিখরের উচ্চতা দুই হাজার তিন শো ফুট। এ-রকম দ্বীপ দূর থেকে দেখলেও চেনা শক্ত হবে না।”—ব’লেই ফিরে দাঁড়িয়ে বিমল চোখে দূরবীণ লাগিয়ে সমুদ্রের পশ্চিম দিকে তাকিয়ে কি দেখতে লাগল।