পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অমৃত-দ্বীপ

 সুন্দরবাবু বললেন, “হুম্! আচ্ছা বিমলবাবু, আমরা যাচ্ছি তো পূর্ব্বদিকে। অথচ আজ ক’দিন ধ’রেই আমি লক্ষ্য করছি, আপনি যখন-তখন চোখে দূরবীণ লাগিয়ে পশ্চিম দিকে কি যেন দেখবার চেষ্টা করছেন! এর মানে কি?”

 জয়ন্ত এতক্ষণ পরে মুখ খুলে বললে, “এর মানে আমি আপনাকে বলতে পারি। বিমলবাবু দেখছেন আমাদের পিছনে কোন শত্রুজাহাজ আসছে কি না!”

 —“এখানে আবার শত্রু আসবে কে?”

 —“কেন, কলকাতাকে যারা ড্রাগনের দুঃস্বপ্ন দেখিয়েছিল, আপনি এরি মধ্যে তাদের কথা ভুলে গেলেন নাকি?”

 —“কী যে বল তার ঠিক নেই! সে দল তো ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে।”

 —“কেমন ক’রে জানলেন?”

 —“পালের গোদা কুপোকাৎ হ’লে দল কি আর থাকে?”

 দূরবীণ নামিয়ে বিমল বললে, “আমার বিশ্বাস অন্য রকম। সে দলের প্রত্যেক লোকই মরিয়া, তারা সকলেই অমৃত-দ্বীপে যাবার জন্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কিন্তু ও-দ্বীপের ঠিকানা তারা জানে না, কারণ ম্যাপখানা আছে আমাদের হাতে। আমরা যে তাদের দেশের কাছ দিয়ে অমৃত-দ্বীপে যাত্রা করেছি, নিশ্চয়ই এ-সন্ধান তারা রাখে। যারা লাউ-ৎজুর মূর্ত্তি আর ঐ ম্যাপের লোভে সুদূর চীন থেকে বাংলাদেশে হানা দিতে পেরেছিল তারা যে আর একবার শেষ চেষ্টা করে দেখবে না, এ-কথা আমার মনে হয় না।”