পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
অমৃত দ্বীপ

 —“চিকিৎসায় রোগ যদি না সারে, তাহ’লে? আপনি অমর, সুতরাং মরবেন না। কিন্তু সারাজীবন—অর্থাৎ অনন্তকাল আপনাকে ঐ বিষম রোগের যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে।—অর্থাৎ সারা-জীবন চেঁচিয়ে মরতে হবে পাগ্‌লা কুকুরের মতন ঘেউ-ঘেউ ক’রে!”

 —“তাই তো হে, এ-সব কথা তো আমি ভেবে দেখি নি!”

 —“তার পর শুনুন। আপনি অমর হ’লেও আপনার দেহ বোধ করি অস্ত্রে অকাট্য হবে না। কেউ যদি খাঁড়া দিয়ে আপনার গলায় এক কোপ, বসিয়ে দেয়, তাহলে কি মুস্কিল হতে পারে ভেবে দেখেছেন কি? আপনি অমর। অতএব হয় আপনার মুণ্ড, নয় আপনার দেহ, নয়তো ও-দুটোই চিরকাল বেঁচে থাকবে। কিন্তু সেই কন্ধকাটা দেহ আর দেহহীন মুণ্ড নিয়ে আপনি অমরতার কি সুখ ভোগ করবেন?”

 —“মাণিক, তুমি কি ঠাট্টা করছ?”

 —“মোটেই নয়। অমর হওয়ার আরো সব বিপদের কথা শুনতে চান?”

 — “না, শুনতে চাই না। তুমি বড্ড মন খারাপ ক’রে দাও। অমৃত-ফল পেলেও আমি আর খেতে পারব কিনা সন্দেহ।”

 জয়ন্ত এতক্ষণ কেতাবের আড়ালে মুখ লুকিয়ে হাসছিল। এখন কেতাব সরিয়ে বললে, “সুন্দরবাবু, অমৃত-দ্বীপের কথা হয়তো রূপকথা ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু আজকের শুক্‌নো বৈজ্ঞানিক জগতে সরস রূপকথার বড়ই অভাব হয়েছে। সেই অভাব পূরণের কৌতূহলেই আমরা বেরিয়েছি অমৃত-দ্বীপের সন্ধানে। সুতরাং অমর-লতা না