পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
অমৃত-দ্বীপ

উপায় নেই! তবে মানুষের গোলমাল শুনে বোধ হচ্ছে, ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে সেও কোথায় ছুটে চলেছে, হয়তো সমুদ্র এখনি তাকে গিলে ফেলবে!”

 রামহরি সানন্দে বললে, “জয় বাবা পবনদেব! আজ তুমিই আমাদের সহায়!”

 খানিকক্ষণ পরেই চারিদিক আবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শূন্যে নেই অন্ধ মেঘের কালিমা, সমুদ্রে নেই বিভীষণের তাণ্ডবলীলা। একটু আগে কিছুই যেন হয় নি, এমনি ভাবেই মুখর নীলসাগর আবার বোবা নীলাকাশের কাছে আদিম যুগের জীবহীনা ধরিত্রীর পুরাতন গল্প-বলা সুরু করলে।

 সূর্য্য সাগর-স্নানে নেমে অদৃশ্য হ’ল, কিন্তু আকাশ আর পৃথিবীতে এখনো আলো যেন ধরছে না! দূর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে সামুদ্রিক পাখী ফিরে আসছে দ্বীপের দিকে।

 পাহাড়ের উপরে ব’সে সবাই বিশ্রাম করছিল। সেখান থেকে দ্বীপটিকে দেখাচ্ছে চমৎকার পরীস্থানের মত। নানা জাতের গাছেরা সেখানে সঙ্গীতময় সবুজ উৎসবে মেতে আছে এবং তাদের মধ্যে বিশেষ ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে পাম্‌-জাতীয় গাছেরাই।

 কোথাও পাহাড়ের আনন্দাশ্রুধারার মত ঝ’রে পড়ছে ঠিক যেন একটি খেলাঘরের ঝরণা। রূপালী ফিতার মত তার শীর্ণ ধারা সকৌতুকে পাথরে পাথরে নাচতে নাচতে নেমে এসেছে নীচেকার সুন্দরশ্যাম জমির উপরে— যেখানে শ্যামলতাকে সচিত্র ক’রে তুলেছে রং-বেরঙের পুঞ্জ পুঞ্জ ফুলের দল। খানিক পরেই রাত হবে, তারার