পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/৩৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৮
অমৃত-দ্বীপ

একেবারে স্থির হয়ে রয়েছে। তাদের জাহাজ আর লাইফ-বোট ছাড়া তার উপরে আর কোন জীবজন্তুর চিহ্নমাত্র নেই। বিমল ঠিক কথাই বলেছে। সুন্দরবাবুকে যে আক্রমণ করেছিল নিশ্চয়ই সে মানুষ নয়!

 রামহরি দৃঢ়স্বরে বল্‌লে, “না খোকাবাবু, আমি মিছে কথা বলি নি। সে মানুষ কি না জানি না, কিন্তু তার চেহারা মানুষের মতই। সুন্দরবাবুর কোমর সে নীচে থেকে দু-হাতে আঁক্‌ড়ে ধ’রেছিল। কাঁচের মত পরিষ্কার জলে তার হাত, পা, মুখ, দেহ বেশ দেখা যাচ্ছিল।”

 এতক্ষণ পরে সুন্দরবাবুর হাঁপ-ছাড়া হ’ল সমাপ্ত। দু-হাতে ভর দিয়ে উঠে ব’সে তিনি বল্‌লেন, “হুম্। রামহরি কিচ্ছু ভুল বলছে না। আমাকে ধরেছিল একটা জ্যান্তো মরা-মানুষ!”

 —“জ্যান্তো মরা মানুষ!”

 —“হ্যাঁ, আমি তাকে স্বচক্ষে দেখেছি—একেবারে আসল মড়া! আমি তার হাতের ছোঁয়া পেয়েছি—একেবারে কন্‌কনে অস্বাভাবিক ঠাণ্ডা! কিন্তু সে জ্যান্তো, তার হাতের চাপে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল! মরা মাছের মত স্থির দুই চোখে আমার দিকে সে তাকিয়ে ছিল—বাপ রে, ভাবলে এখনো গায়ে কাঁটা দেয়!”

 রামহরি বল্‌লে, “জ্যান্তো মড়া মানেই হচ্ছে, পিশাচ। সুন্দরবাবু নিশ্চয়ই কোন পিশাচের পাল্লায় প’ড়েছিলেন! ভাগ্যে আমাদের বাঘা ছিল, তাই এ যাত্রা কোন-গতিকে বেঁচে গেলেন! বাঘার কাছে পিশাচও জব্দ!”

 সুন্দরবাবু কৃতজ্ঞ-দৃষ্টিতে বাঘার দিকে তাকিয়ে বল‍্লেন, “হুম্। বাঘা, আয় রে, আমার কাছে আয়! তুই যে কি রত্ন, এতদিন আমি