পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/৩৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩২
অমৃত-দ্বীপ


 সুন্দরবাবু তিক্তস্বরে বললেন, “মাণিক, ঐ কি তোমার মৎস্যনারী? ওটা একটা বুড়ো চীনেম্যানের মড়া? ওই-ই কাল আমাকে আক্রমণ করেছিল!”

 মাণিক বললে, “নিশ্চয় ও বোম্বেটে—জাহাজের যাত্রী ছিল, কালকের ‘টাইফুনে’ জলে ডুবে মারা পড়েছে।”

 —“হুম্, মারা পড়েছেই বটে! তাই স্রোতের উল্টোমুখে এগিয়ে চলেছে কলের জাহাজের সঙ্গে পাল্লা দিতে দিতে!”

 রামহরি কাঁপতে কাঁপতে বললে, “সকলে রাম-নাম কর—রাম-নাম কর—রাম-নাম কর। ও পিশাচ,আমাদের রক্ত খেতে চায়!”

 কুমার বল্‌লে, “বিমল, ‘তাও’-সাধুদের কথা স্মরণ কর। যারা ‘সিয়েন্’ বা অমর হয়, জলে-স্থলে-শূন্যে তাদের গতি হয় অবাধ! আমরা হয়তো অমৃত-দ্বীপের কোন ‘সিয়েন্’কেই আজ চোখের সামনে স্পষ্ট দেখছি।”

 জয়ন্ত বল্‌লে, “আজকের যুগে ও-সব আজগুবি কথা মানি কি ক’রে?”

 বিমল বল্‌লে, “না মেনেও তো উপায় নেই জয়ন্তবাবু! ড্রাগনের দুঃস্বপ্ন মামলার সময়েই আমি কি আপনাকে মনে করিয়ে দিই নি যে, কাশীর ত্রৈলঙ্গ স্বামী কত শত বৎসর বেঁচেছিলেন তা কেউ বলতে পারে না? সময়ে সময়ে তাঁরও দেহ বৎসরের পর বৎসর ধ’রে গঙ্গাজলে ভেসে ভেসে বেড়াত? ত্রৈলঙ্গ স্বামীর কথা তো পৌরাণিক কথা নয়, আধুনিক যুগেরই কথা!”

 —“বিমলবাবু, আপনার বিরুদ্ধে কিছু বলবার মত যুক্তি খুঁজে