পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/৩৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
অমৃত-দ্বীপ
৩৩

পাচ্ছি না, আর চোখের সামনে যা স্পষ্ট দেখছি তাকে উড়িয়ে দেবার শক্তিও আমার নেই। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, আমরা সবাই একসঙ্গে পাগল হয়ে গেছি! এও কি সম্ভব? বেগবান্ অথচ আড়ষ্ট নিশ্চেষ্ট মৃতদেহ ছোটে আধুনিক কলের জাহাজের সঙ্গে! এর পরেও আর অবিশ্বাস করব কিসে? এখন অচল পাহাড়কেও চলতে দেখলে আমি বিস্মিত হব না!”

 সুন্দরবাবু বল্লেন, “ও-সব তর্ক থো করুন মশাই, থো করুন। আমার কথা হচ্ছে, ‘সিয়েন্’রা কি মানুষের মাংস খায়? নইলে ও কাল আমাকে আক্রমণ করেছিল কেন?”

 বিমল বল্‌লে, “বোধ হয় ও আমাদের উদ্দেশ্য জানতে পেরেছে। ও তাই বাধা দিতে চায়, আমাদের আক্রমণ করতে চায়!”

 —“তাই নাকি? হুম্!”—ব’লেই সুন্দরবাবু এক ছুটে নিজের কামরায় গিয়ে একটি বন্দুক নিয়ে ফিরে এলেন।

 কুমার বল্‌লে, “আপনি কি করতে চান সুন্দরবাবু?”

 সুন্দরবাবু বল্‌লেন, “আমি দেখতে চাই, অমৃত-দ্বীপে যারা থাকে তারা কেমনধারা অমর? আমি দেখতে চাই, ঐ জ্যান্তো মড়াটা বন্দুকের গরমাগরম বুলেট হজম করতে পারে কিনা?”

 রামহরি সভয়ে বল্‌লে, “পিশাচকে ঘাঁটাবেন না বাবু, পিশাচকে ঘাঁটাবেন না। কিসে কি হয় বলা তো যায় না!”

 —“আরে, রেখে দাও তোমার পিশাচ-ফিশাচ! পুলিসের কাজই হচ্ছে যত নরপিশাচ বধ করা।”—এই ব’লেই সুন্দরবাবু বন্দুক তুলে সেই ভাসন্ত দেহটার দিকে লক্ষ্য স্থির করলেন!

 ফল কি হয় দেখবার জন্যে সকলে অপেক্ষা করতে লাগল, সাগ্রহে।