শিখরওয়ালা পাহাড়টার দিকে তাকিয়ে দেখ। দ্বীপের ভিতর থেকে একটি নদী পাহাড় ভেদ ক’রে সমুদ্রের উপর এসে পড়েছে। আমাদের দ্বীপে ঢুকতে হবে ঐ নদীতেই নৌকো খেয়ে।”
সুন্দরবাবু বল্লেন,“আমি আগে থাকতেই জানিয়ে রাখছি, আমায় যেন জাহাজ থেকে নামতে বলা না হয়!......কেমন রামহরি, তুমিও তো আমার দলেই?”
রামহরি প্রথমটা চুপ ক'রে রইল। তার পর মাথা নাড়তে নাড়তে বল্লে, তা হয় না মশাই! খোকাবাবুরা যদি নামেন, আমাকেও নামতে হবে।”
সুন্দরবাবু বিস্মিত স্বরে বললেন, “সে কি হে রামহরি, ও দ্বীপ যে পিশাচদের দ্বীপ! ওখানে যারা ম'রে যায় তারাও চ'লে বেড়ায়!”
রামহরি বল্লে, “খোকাবাবুদের জন্যে আমি প্রাণও দিতে পারি।”
সূর্য্য অস্ত গেল। জাহাজ তখন দ্বীপের খুব কাছে। ঘনিয়ে উঠল সন্ধ্যার অন্ধকার। জাহাজ শৈল-দ্বীপের পঞ্চশিখরের তলায় গিয়ে দাঁড়াল।
সমুদ্রের পাখীরা তখন নীরব। আকাশ-আসরেও লক্ষ লক্ষ তারা প্রতিপদের চন্দ্রের জন্যে রয়েছে মৌন অপেক্ষায়। দ্বীপের ভিতর থেকেও কোনরকম জীবনের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
সমুদ্র কিন্তু সেখানেও বোবা নয়, তার কল্লোলকে শোনাচ্ছে স্তব্ধতার বীণায় অপূর্ব এক গীতিধ্বনির মত।
তারপর ধীরে ধীরে উঠল চাঁদ, অন্ধকারের কালো নিকষে রূপোলী আলোর ঢেউ খেলিয়ে।