পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sứ অরক্ষণীয়া জ্ঞানদা তেমনি মুখ ঢাকিয়া মুহুস্বরে বলিল, কি জানি মা, তার ধর্ম তঁর কাছে । দুর্গামণি আনন্দের আবেগে। কঁাদিয়া কহিলেন, তামাকে সংশয়ে ফেলে। আর বিধিসনে মা, একবার মুখ ফুটে বল-আমি তোর বাপের জন্যে একটিবার প্রাণ খালে কঁাদি । আমার এ কান্না আজ তিনি শুনতে পাবেন । মেয়ে চুপি চুপি কহিল, কঁাদো না মা-আমি ত তোমাকে কঁদিতে বারণ করিনি ! বাবাকে জানাতে বলেছিলাম-তিনি নিজেই ত জানিয়েচন । এখন তঁর ধর্ম তার কাছে । দুৰ্গামণি এবার আর বাধা মানিলেন না। জোর করিয়া মেয়ের আরাক্ত অশ্রুসিক্ত মুখখানি তুলিয়া ধরিয়া, তাহাকে অজস্র চুম্বন করিয়া পুনরায় বুকের উপর চাপিয়া ধরিয়া, নীরবে বহুক্ষণ ধরিয়া অশ্রুপাত করিলেন। পরে চোখ মুছিয়া ধীরে ধীরে বলিতে লাগিলেন, তাই বােট মা, বটে। অতুল আমার দীর্ঘজীবী হোক--তার ধর্ম তার কাছেই বটে। কিন্তু এ-কথাটা আমাদের কারু একদিনের তরে মনে পড়েনি মা, তুই নিজেই যে তাকে মরা বঁচিয়েছিলি । সে বছর, লোকে বললে বেরিবেরি রোগ। তা সে যে রোগই হোক-ফুলে, ফোেট, ঘা হয়েআগে তার মা, তার পরে অতুল । অতুলের ত কোন আশাই ছিল না। ভয়ে কেউ যখন তাদের ওদিক মাড়াত না, তখন এতটুকু মেয়ে হয়ে তুই যমের সঙ্গে দিবারাত্রি লড়াই করে তাকে ফিরিয়ে এনেছিলি । সে ধর্ম সে কি না রেখে পারে ? সাবিত্রীর মত যাকে তুই যমের হাত থেকে ফিরিয়ে এনেছিলি, তাকে কি ভগবান আর কারু হাতে তুলে দিতে পারেন ? এ ধর্ম যদি না থাকে, তবে চন্দ্র-সূর্য এখনো উঠচে কেন ? একটুখানি মৌন থাকিয়া পুনরায় পুলকিতচিত্তে বলিতে লাগিলেন, এখন যেখানে আমাকে বলিস সেইখানেই যাবো। কিন্তু তুই ত তার মত না নিয়ে যেতে পারিসনে বাছা! তাই বটে। তাই বটে। তাই