পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া 8 দুর্গামণি কহিলেন, তাই দৃষ্টান্তই শুধু চিরজীবী হয়ে আছে বাবা, আর কিছু নেই। তাতে কিন্তু আর সান্তনাও পাইনে, জোরও পাইনে অতুল। গিরিশ ভট্টচায্যির মেয়ের বিয়ে চােখের ওপর দেখে হাত-পা যেন পেটের ভিতর ঢুকে গেছে। ঠিক আমাদের মতইনা ছিল তার টাকার বল, না ছিল মেয়ের রূপ - তাই পাত্রের বয়সও গেল। ষাটের কাছাকাছি। তার মায়ের কান্নাটা আমি আজও যেন শুনতে পাচ্ছি । অতুল সবিস্ময়ে প্রশ্ন করিল, ষাটের কাছাকাছি ! বল কি ? তা হবে বৈ কি বাবা । হরি চক্কোত্তির নাতজামাই হ’ল ও-পাড়ার নিতাই চাটুয্যে। তারই একটা আট-দশ বছরের মেয়ে যে ! হিসেব করে দেখ দেখি । খবর শুনিয়া অতুল স্তব্ধ হইয়া চাহিয়া রহিল। দুর্গামণি বলিতে লাগিলেন, সে মেয়ে যদি মনের ঘেন্নায় বিষ খায়, গলায় দড়ি দেয়, কিংবা কুলে কালি দিয়ে চলে যায-মা হয়ে তাকে বুকের ভেতর থেকে অভিশাপ দিই কেমন করে, বল দেখি বাবা ? অতুল চুপ করিয়া রহিল। দুর্গামণি হঠাৎ তাহার হােতটা চাপিয়া ধরিয়া বলিলেন, বাবা অতুল, আজকাল সবাই বলে, তোদের ছেলেদের মধ্যে দয়া-ধৰ্ম আছে। দেখিস না বাবা, তোদের ইস্কুলকলেজের কোন ছেলে যদি নিতান্ত দয়া করেই মেয়েটাকে তার পায়ে একটুখানি ঠাই দেয়। তা হ’লে তোদের কাছে আমি মরণ পর্যন্ত কেন হয়ে থাকব । অতুল শশব্যাস্তে হাত ছাড়াইয়া লইয়া তাহার পায়ের ধূলা মাথায় লইয়া আৰ্দ্ধ-কণ্ঠে বলিয়া ফেলিল, কেন এত ব্যস্ত হচ্চে মেজমাসিমা ? আমি কথা দিচ্চি-- কিন্তু কথাটা সে দিতে পারিল না। সহসা লজ্জায় তাহার কর্ণমূল পর্যন্ত রাঙা হইয়া কণ্ঠরোধ হইয়া গেল। দুর্গামণি যদিচ ইহা লক্ষ্য