যুক্তিবাদী বিশ্লেষণ :
এ কবিতার ব্যাখ্যায় প্রথমেই একটা মারাত্মক গোলমাল রয়ে গেছে। নস্ট্রাডামুস কিন্তু তাঁর সমস্ত সেঞ্চুরিতে যতবার ‘অপরাজেয় পাখি’ কথাটা ব্যবহার করেছেন, ততবারই এরিকা নেপোলিয়নের প্রসঙ্গ টেনেছেন। এরিকা বলেছেন যে, ‘অপরাজেয় পাখি’ মানেই নেপোলিয়ন। তাহলে এই ৩৪নং কবিতাতে ‘অপরাজেয় পাখি’ নেপোলিয়ন না হয়ে হিটলার হল কেন? দ্বিতীয় লাইনটার জন্য?
হিটলার কেন? ইংরেজরা নয় কেন? ইংরেজরাও তো ছিল অপরাজেয়। ইংরেজরা ফরাসিদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন একাধিকবার। ইংরেজরা কারো কারো কাছে ছিল নায়ক, কারো কাছে খলনায়ক। এদেশের ‘বাবু’ সম্প্রদায়রা ইংরেজদের মনে করতেন নায়ক, আবার এদেশেরই বিপ্লবীদের কাছে তারা ছিল খলনায়ক। ‘দুর্বল-শক্তি তাকে শুভ বলে মনে করবে’—এটাও ইংরেজদের ক্ষেত্রে ঘটানো যায়। গরণ ইংরেজরা এমন অনেক দুর্বল রাজ্য দখল করেছিল, যারা ইংরেজদের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। তাদের কাছে ইংরেজরা অবশ্যই শুভ বলে বিবেচিত হয়েছিল।
তাহলে এই কবিতাতে যে ইংরেজদের কথা বলা হয়নি, এরিকা দেবী তা জোরগলায় বলেন কী করে? পাঠকরা, একটু ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি করলে অন্য কারোর সঙ্গেও এই কবিতাটা আপনারা জুড়ে দিতে পারবেন। নস্ট্রাডামুসের কবিতাগুলির মজা এইখানেই৷৷
কবিতা—৩৫ (সেঃ—১)
এই কবিতাটার বিস্তৃত ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই বইয়ের ৩১২ পৃষ্ঠাতে, তাই আর দ্বিতীয়বার আলোচনায় গেলাম না। তবে চতুর ব্যাখ্যাকারদের দৌলতে কবিতাটা সত্যিই মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারে। এই কবিতাতে হেনরি-IIর মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী করা আছে বলে দায়ী করা হয়েছে ।