পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
অলৌকিক নয় লৌকিক ২

তবে কার? অনীশবাবু, আপনার কথা যদি সত্যি হয়, অর্থাৎ কাহিনিটা ‘গল্পকথা’ই হয়, তবে ত্রুটি স্বীকারের প্রশ্ন আসছে কেন? আপনার কথাই আপনার মিথ্যাচারিতাকে ধরিয়ে দিচ্ছে না কি?

অনীশবাবু, আপনাকে শেষ প্রশ্ন, সত্যিই কি আপনি যুক্তিবাদী আন্দোলনের সাফল্য কামনা করেন? যুক্তিবাদী আন্দোলনের সাফল্য মানেই আপনার মতো অপ-বিজ্ঞানের ধারক-বাহক ও মিথ্যাচারীদের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকা।

বেলঘরিয়ার গ্রিন পার্কে ভূতুড়ে বাড়িতে ঘড়ি ভেসে বেড়ায় শূন্যে

 ’৮৭-র আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে বেলঘরিয়ার গ্রিন পার্কের একটি বাড়ি ঘিরে রহস্যজনক অনেক কাণ্ড-কারখানা নাকি ঘটতে থাকে। খাবার-দাবার উল্টে যাচ্ছে, হাতা, খুন্তি, থালা, বাসন, এমনকী বাড়ির দেওয়াল ঘড়িটি পর্যন্ত নাকি উড়ে বেড়াচ্ছে। ভূতুড়ে কাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী মেলা। প্রতিদিন ভূতের নাচন দেখতে শয়ে শয়ে মানুষ ভিড় জমাতে লাগলেন।

 আমাদের সমিতির সেই সময়কার সহ-সম্পাদক বিজয় সেনগুপ্ত ১৭ আগস্ট গেলেন একটি নিরীহ প্রস্তাব নিয়ে। পাড়ার ছেলেরা তখন বাড়ি ঘিরে ব্যারিকেড তৈরি করেছেন। তার বাইরে বিশাল জনতা ভূতুড়ে বাড়ির দিকে তাকিয়ে। আমাদের সমিতির নাম করে ভিতরে ঢোকার অনুমতি পেলেন বিজয়। বাড়ির মালিক দিলীপ ঘোষ বাড়িতেই ছিলেন। বয়স পঁয়তাল্লিশ থেকে পঞ্চাশ। বাড়ির প্ল্যান তৈরি করেন। দুই বিয়ে। সম্পত্তি নিয়ে অশান্তি চলছে। বিজয় ভূতের কাণ্ড-কারখানার কথা দিলীপবাবুর কাছ থেকে যা শুনলেন, তা আগে শোনা ঘটনারই পুনরাবৃত্তি। ইতিমধ্যে তান্ত্রিকের পিছনে অনেক টাকাও নাকি বেকার খরচা করেছেন দিলীপবাবু।

 বিজয় আমাদের সমিতির তরফ থেকে প্রস্তাব দিলেন, সমিতির সম্পাদক প্রবীর ঘোষ এখানে একনাগাড়ে তিন দিন তিন রাত থাকবেন, এর মধ্যে কোনও ভৌতিক ঘটনা ঘটলে আমাদের সমিতির তরফ থেকে প্রবীর ঘোষ দেবেন পঞ্চাশ হাজার টাকা। ভূতের উপদ্রব না হলে বাড়ি ভুত মুক্ত করার জন্য আপনি আমাদের সমিতিকে দেবেন মাত্র পাঁচ হাজার। যুক্তিবাদী সমিতির তিনজন সদস্য প্রবীরবাবুর সঙ্গী হবেন।

 প্রস্তাবে দিলীপবাবু চমকালেন, বললেন, ‘না, না, আজ থেকে ভূতের উপদ্রব বন্ধ হয়ে গেছে তো।’